দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (আইএসএল) শিরোপা জয়ের লড়াই। শেষ পর্যন্ত কার হাতে ওঠে এই স্বপ্নের শিরোপা? এমন প্রশ্নই বিরাজ করছিল ফুটবলবিশ্বে।
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান হলো। শনিবার শচীন টেন্ডুলকারের কেরালা ব্লাস্টার্সকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে শিরোপা জিতল সৌরভ গাঙ্গুলির অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা। আইএসএলের প্রথম আসরে ট্রফি জিতে ইতিহাস গড়ল সৌরভের দল।
মুম্বাইয়ের মাঠে ফাইনাল। কলকাতার সেরা খেলোয়াড় ফিকরু নেই স্কোয়াডে। তাতে কী? শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে কলকাতা খেলেছে কলকাতার মতোই। স্বপ্নের শিরোপা ঘরে তুলতে নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিয়েছেন কলকাতার ফুটবলাররা।
কিন্তু ফাইনাল বলে কথা। কেউ কাউকে ছাড় দেওয়ার মতো দল নয়। শুরুতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে ছিল কেরালাই। কিন্তু খেলায় যতই বল দখলে থাকুন না কেন, গোলের দেখা না মিললে তা কাজে দেয় না। অপরদিকে, ফিকরুবিহীন কলকাতার আক্রমণভাগও ছিল অনেকটা নিষ্প্রভ। তাই গোলশূন্যভাবে প্রথমার্ধ শেষ হয়।
খেলায় কে জেতে, তখনো এটাই ফুটবল ভক্তদের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। গ্যালারিতে বসা ছিলেন ভারতের দুই কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার ও সৌরভ গাঙ্গুলি। দুজনই আবার দুই ফাইনালিস্ট দলের মালিক। মাঠে যেমন ফুটবলারদের মধ্যে লড়াই চলছিল, আবার মাঠের বাইরে লড়াইটা চলছিল মালিকের ভূমিকায় থাকা দুই কিংবদন্তির মধ্যেও।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষেও গোলের মুখ দেখেনি কোনো দলই। এর মধ্যে কিছুটা আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণ হলেও ম্যাচটি সবার কাছে বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। ক্যামেরার ফোকাস চলে যায় গ্যালারির দর্শকের দিকে। তাদের মুখ যেন অন্ধকারে ঠাসা। এমন বিরক্তিকর (গোলহীন) ফাইনাল কারোরই চাওয়া নয়।
এদিকে দুশ্চিন্তার ছাপ দেখা যাচ্ছিল সৌরভ ও শচীনের চোখে-মুখেও। কিন্তু ইনজুরি টাইমই পাল্টে দিল ম্যাচের ভাগ্য। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচ গড়াতেই চমক দেখালেন মোহাম্মেদ রফিক। আইএসএলের প্রথম আসরের ফাইনালের নায়ক বনে যান তিনি। ৯৪ মিনিটে জেকুব পান্ডের কর্নার-কিক থেকে পাওয়া বল দুর্দান্ত হেডে কেরালার জালে জড়ান তিনি (১-০)। বিরক্তিও দূর হলো। এই গোলই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়।
ইতিহাস গড়ল অ্যাটলেটিকো ডি কলকাতা। ইতিহাস গড়লেন ক্রিকেট থেকে ফুটবলে মনোনিবেশ করা কলকাতার মালিক সৌরভ গাঙ্গুলিও। শিরোপা ঘরে তুলে কথা রাখলেন কলকাতার যুবরাজ।