রাতুল মন্ডল, শ্রীপুর(গাজীপুর): শ্রীপুরে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে একটি ক্যামিকেলের কারখানা। অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা ওই কারখানায় প্রতিনিয়ত ঘটছে নানা দুর্ঘটনা । এমন ঝুঁকির মধ্যেও কারখানায় কাজ করছেন অনেক নিরীহ শ্রমিকরা। ওই কারখানার সোডিয়াম সালফাইড গুঁড়ো বাতাসে উঁড়ে এসে এলাকাবাসী নানা রোগে ছড়াচ্ছে । এছাড়া কারখানার দুগন্ধে মসজিদে নামাজ পড়তে পারছে না মুসুল্লিরা। এলাকাবাসী অবিলম্বে ওই কারখানাটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানিয়েছে।
এলাকাবাসী জানায় উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ি গ্রামের দেওচালা এলাকায় আলিফ প্রিন্টিং এন্ট প্যাকেজিং কারখানার ভেতরে অবৈধ ভাবে সোডিয়াম সালফাইডের সাথে আরো কিছু রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে বিভিন্ন কল-কারখানায় বিক্রি করে। এছাড়াও এসিড ভর্তি গ্য্যালেন উন্মুক্ত স্থানে রেখে দিয়েছে। এগুলোও কারখানা থেকে বিক্রি করা হয়। খবর নিয়ে জানা যায়, সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড বিভিন্ন শিল্প কলকারখানায় ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে পাল্প এবং কাগজ, টেক্সটাইল, সাবান এবং ডিটারজেন্টস, পানীয় জল, নর্দমা পরিষ্কার ইত্যাদিতে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইডের বহুল ব্যবহার হয়। ওই কারখানায় দুর্গন্ধে ওই এলাকার আশেপাশের লোকজন নানা রোগ ব্যতীতে ভুগছেন । মানুষের শরীরে চুলকানি এ্যাজমাসহ নানা রোগ হচ্ছে। নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে শিশুদের। এলাকাবাসী আরও জানায়, দেওচালা এলাকায় প্যাকেজিং কারখানার গত কয়েক বছর আগে চালু করেন ঢাকার মো.জাহিদুল আলম এক ব্যক্তি। ওই কারখানায় শ্রমিক রয়েছে প্রায় ২৫ জন।
কারখানাটি ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে কাজ করছে শ্রমিকরা। এছাড়া ক্ষোদ ওই কারখানার শ্রমিকরা নানা রোগে ভুগছেন হাতে ও পায়ে তাদের চর্ম রোগ ব্যধি হচ্ছে। এছাড়া কারখানাটির নেই কোন বিস্ফোরক অধিদপ্তর অথবা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রসহ বৈধ কোন কাগজপত্র।
গাজীপুর ভাওয়াল নাগরিক কমিটির সভাপতি মো.আজহার হোসেন তালুকদার বলেন, সরকারের নীতিমালা ও প্রত্যক্ষ নজরদারির বাইরে দেশের কোনো স্থানেই কেমিক্যাল ব্যবসার সুযোগ থাকা উচিত নয়। জেলা-উপজেলা সদরেও যদি উচ্চমাত্রার দাহ্য পদার্থ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে, সেক্ষেত্রেও বিপুল হতাহতের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এ অবস্থায় দাহ্য রাসায়নিকের ব্যবসা, পরিবহন ও গুদামজাতের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতার বিকল্প নেই।
কারখানার ব্যবস্থাপক মো.হোসাইন কিশোর বলেন, আমাদের ছাড়পত্রের কাগজ হেড অফিসে থাকতে পারে।
গাজীপুুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.আবু নাসার উদ্দিন বলেন, কারখানাটি যদি কোন প্রকার বৈধ কাজপত্র ছাড়া কেমিক্যাল ব্যবসা করে এটি সম্পূর্ণ অন্যায়। আমরা তদন্ত করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।