বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কুয়াকাটা-বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক অবরোধের ডাক দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের লিয়াজোঁ কার্যালয়ে সিন্ডিকেটের সভা সিদ্ধান্ত ছাড়া শেষ হওয়ার পর রাতে বৈঠক করে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম ইমামুল হক গতকাল রাত ১২টার দিকে বলেন, ‘সিন্ডিকেটের সভায় সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করছি।’
আর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি লোকমান হোসেন বলেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, সিন্ডিকেটের সভায় উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক কোনো ঘোষণা আসবে। কিন্তু সেটা না পাওয়ায় রাত ১১টার দিকে আমরা বৈঠক করেছি। বৈঠকে আগামীকাল (আজ) বেলা ১১টা থেকে কাফনের কাপড় পরে কুয়াকাটা-বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক অবরোধ ও আমরণ অনশন পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।’
গত ২৬ মার্চ এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে মন্তব্য করলে ২৭ মার্চ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেন শিক্ষার্থীরা। ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ২৯ মার্চ উপাচার্য এস এম ইমামুল হক তাঁর মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তি দেন। তবে তা প্রত্যাখ্যান করে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত সোমবার তাঁদের বেঁধে দেওয়া ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা গতকাল বেলা একটায় শেষ হয়। এর মধ্যে উপাচার্যের পক্ষ থেকে পদত্যাগের বা ছুটিতে যাওয়ার লিখিত ঘোষণা না আসায় শিক্ষার্থীরা গতকাল আবারও মহাসড়ক অবরোধ করেন। আগের দিনও তাঁরা দুই ঘণ্টার জন্য মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন।
স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র বলেছে, বেলা একটায় শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা টায়ার জ্বালিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। সড়কের দুই পাশে শত শত বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন আটকা পড়ে। বেলা দুইটায় শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।
পদত্যাগের দাবির বিষয়ে উপাচার্য ইমামুল হক গতকাল দিনের বেলায় বলেন, ‘এটা বাড়াবাড়ি। এটা এখন আর শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়। কতিপয় শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অশুভ চক্রের আর্থিক ও নানা ধরনের প্ররোচনায় এই আন্দোলন করছে।’