ঢাকা:নরসিংদীর রায়পুরায় ঘরে আগুন লেগে তিন বোনসহ একই পরিবারের ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষরা তাদের বাড়িতে আগুন দেয়। তবে পুলিশ বলছে, কয়েক বছর আগের একটি হত্যা মামলার জের ধরে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধ তিন বোন হলো, ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী প্রীতি আক্তার (১১), অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সুইটি আক্তার (১৩) ও এসএসসি পরীক্ষার্থী মুক্তামনি (১৬)। তাদের সঙ্গে দগ্ধ হয়েছেন তাদের ফুফু খাতুন্নেছা (৬০)। দগ্ধদের প্রথমে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
পরে তাদের ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসা হয়।
বার্ন ইউনিটের মেডিকেল অফিসার ডা. এনায়েত কবির বলেন, রায়পুরা থেকে চার জন দগ্ধ রোগী এসেছে। তাদের সবার দুই হাতসহ মুখ ও শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। এর মধ্যে খাতুন্নেছার শরীরের ১২ শতাংশ, প্রীতির ১৫ শতাংশ, মুক্তামনির ১০ শতাংশ ও সুইটির শরীরের ১৫ শতাংশ আগুনে দগ্ধ হয়েছে।
দগ্ধ বড় বোন রতœা আক্তার জানান, প্রতিবেশী শিপন-কাজলদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সেই বিরোধের জের ধরে কয়েক বছর আগে মিথ্যা হত্যা মামলা দেয়া হয় আমার দুই ভাই সোহাগ ও বিপ্লবের বিরুদ্ধে। তারা এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এর মধ্যে গত ডিসেম্বরে বাবা (শামছুল হক) মারা যান। তারপর থেকে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে।
রতœা জানান, আজ ভোরে তারা সবাই বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন। তখন পাশের বাড়ির শিপন, কাজল, রবিন, লোকমানসহ কয়েকজন এসে তাদের ঘরে বোমা মেরে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তবে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দুলাল মিয়া হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বিপ্লব মিয়ার পরিবার গা ঢাকা দিয়ে ছিল। কিছুদিন আগে জামিনে মুক্তি পেয়ে সোমবার নিজ বাড়িতে আসে বিপ্লব মিয়ার পরিবার। এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, কিভাবে তাদের বাড়িতে আগুন লেগেছে, তা তারা জানেন না।
তবে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিনুল কবির বলেন, যারা আহত হয়েছে, এলাকায় তাদের সঙ্গে জমিজমা নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। এর আগে এলাকায় পরপর দুইটি মার্ডার হয়। সেই হত্যা মামলার আসামি এদের দুই ভাই সোহাগ ও বিপ্লব। এর মধ্যে বিপ্লব এলাকায় ডাকাত হিসেবে পরিচিত। সেই ঘটনার জের ধরে ঘটনাটি ঘটতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ওসি মহসিনুল কবির আরও বলেন, এ ঘটনাটি অগ্নিকাণ্ড নাকি পেট্রোল বোমা থেকে, সে বিষয়ে এখনও আমরা স্পষ্ট তথ্য পাইনি। আহতদের খোঁজখবর নিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে।