তিনদিন পর বাড়ি এলো ছেলেটি।
কোথায় ছিলো কেউ জানেনা। জিজ্ঞেস করলেও বলেনা কিছু। আজকাল মাঝেমধ্যেই বাড়ি আসা ছেড়ে দেয়। উচ্চ শিক্ষিত ছেলে, লেখাপড়ায়ও ভালো ছিলো। কিন্তু হলে কী হবে, কোনো চাকুরীবাকরি যোগাতে পারেনি এতোদিনেও! এ নিয়ে পরিবারে একটা অশান্তি লেগেই থাকে সবসময়। বাবার লাল চোখ ছেলেটিকে কুঁকড়ে দেয়। লজ্জায়, অপমানে সারাদিন এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করে। বাড়িটা তার কাছে নরকের মতো মনে হয়, যেনো এখানকার আগুন কোনোকালেই নেভেনি!
সেদিন দুপুরের পর সবার যখন খাওয়া শেষ ঠিক তখনই ঘরে এলো ছেলেটি। মা তাকে হাত ধরে নিয়ে খেতে বসালেন। জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় থাকিস বল তো? তোকে ছাড়া আমার যে কেমন লাগে সেকথা কি কোনোদিনই বুঝবিনা?
ছেলে চুপচাপ বসে আছে, ভাত সামনে এলো। মা ছোটো মাছের তরকারি পাতে দিতে দিতে বললেন:
নে এবার খা। ছেলে ভাত মেখে মুখে পুরতে যাবে অমনিই বাবা এসে হাজির!
: লজ্জা করেনা তোমার? লজ্জা করেনা বুড়ো বাপের
বুকের উপর বসে ভাত গিলতে? আরো অনেক কথা। সেগুলো বেকার ছেলের কানে যায়নি।
মাখানো ভাত আস্তে আস্তে পড়ে যায় আঙ্গুলের ফাঁক গলে। ধীর, শান্ত চোখ অপলক পড়ে রয় ভাতের থালায়। এরপর হাত ধুয়ে বাইরে চলে যায়, ভাত আর খাওয়া হয়না ছেলের!
মা তার চলে যাওয়া পথে পিছু ডাকে………
খোকা, খেয়ে যা, খেয়ে যা খোকা……