জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এক আলোচনা সভায় গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ধমক দিয়েছেন দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে রবিবার সন্ধ্যায় আয়োজিত সভায় সভাপতির বক্তৃতাকালে ড. কামালকে কানে কানে কিছু একটা বলার সময় মোস্তফা মহসিন মন্টুকে এ ধমক দেন তিনি।
আলোচনা সভার বিষয়বস্তু ছিল ‘অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দিতে হবে ও জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা কর’।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুল রব, নাগরিক ঐক্যে আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ড. কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করার আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে থাকতে হবে। বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে বিতর্কের কোন অবকাশ নেই। যাদুঘরে গিয়ে আপনারা দেখেন, বঙ্গবন্ধু যে জাতির পিতা, উনার নেতৃত্বে যে স্বাধীনতার সংগ্রাম হয়েছিল এবং দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেসব দলিল সংরক্ষিত আছে।
আর সেই মর্যাদা নিয়ে উনি এখনও আছেন এবং থাকবেন। উনাকে নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না।
ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা আরও বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ঐক্য আছে। এটাকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে। আর ঐক্যকে সুসংগঠিত করে, এখান থেকে যেসব দাবিগুলো উঠেছে, সেগুলো আমরা অর্জন করবো। বক্তব্যের শুরুতে ড. কামাল হোসেন যখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন তখন দর্শক সারি থেকে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক সম্বোধন করে বক্তব্য দিতে ড. কামালের প্রতি দাবি উঠে। নেতাকর্মীরা সমস্বরে টানা প্রায় ১০ মিনিট শ্লোগান দিতে থাকেন। এ দীর্ঘ সময় বক্তব্য বাদ রেখে ড. কামাল হোসেন চুপ করে থাকেন। দর্শক সারি থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে উঠেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া- লও লও লও সালাম। ’ স্লোগানের সময় কামাল বক্তব্য থামিয়ে মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। এর মধ্যেই দর্শক সারির সামনে থেকে বলা হয়, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, একথা আপনাকে (ড. কামাল) বলতেই হবে। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই নেতাদের ধমকে থামিয়ে দেন। তবে এরপরও বেশ কিছুক্ষণ স্লোগান চলতে থাকে।
এক পর্যায়ে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ড. কামালের কাছে এসে তার কানে কিছু কথা বললে তিনি মন্টুকে ধমক দিয়ে বলেন, কেন কথা বলছো? আমি যা বলেছি, তাই বলবো। এর বাইরে একটি কথাও বলবো না। আর আমি তো সকল বক্তার বক্তব্যেকে সমর্থন জানিয়েছি।
ড. কামাল হোসেন বলেন, আজকে যে দাবি নিয়ে আলোচনা হয়েছে আমি এর সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে একমত পোষণ করছি। এই দাবি পূরণে আমাদের ঐক্যকে আরও সুসংহত করতে হবে। তিনি বলেন, সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। এটা সংবিধানে লেখা আছে। বঙ্গবন্ধু যেটা স্বাক্ষর করে গেছেন। সকল ক্ষমতার মালিক যদি জনগণ হয় তাহলে অবশ্যই শাসন ব্যবস্থা হবে গণতন্ত্র। সকল দলের মানুষের মধ্যে এ ব্যাপারে ঐক্য থাকতে হবে। কামাল আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দ্বিমত হলে আমাদের ঐক্যে আঘাত আসে।