ঢাকা: রাজধানী ঢাকা ও কক্সবাজারে পৃথক ‘বন্দকযুদ্ধে’ ৫ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে নরসিংদীর তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী শাফিকুল ইসলাম শফিক (২৮)। কক্সবাজারের পেকুয়া র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে ২ জন। র্যাবের দাবি, তারা জলদস্যু। এছাড়া টেকনাফে বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা গেছে আরও দুই ‘মাদক ব্যবসায়ী’।
সূত্র জানায়, রাজধানীর ভাসানটেকের মাটিকাটা এলাকায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত শফিকুল ইসলাম শফিক (২৮) নরসিংদী পুলিশের তালিকাভুক্ত একজন ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’। তার বিরুদ্ধে হত্যার তিনটি, অস্ত্র আইনে চারটিসহ বিভিন্ন অভিযোগে এক ডজন মামলা রয়েছে থানায়। র্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যমে শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, শফিকের অবস্থান শনাক্ত করে মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে মাটিকাটা এলাকার একটি ভবনে অভিযান চালানো হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শফিক ও তার সহযোগীরা গুলি ছোড়ে।
তখন র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে শফিক গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধ শফিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি আরও বলেন, ওই বাড়ি থেকে প্র্রদীপ চন্দ্র (৩৫) ও ফারুক হোসেন (৩২) নামে শফিকের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনারস্থল থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাবের এক সদস্যও এই অভিযানে আহত হয়েছেন বলে মুফতি মাহমুদ খান জানান।
এদিকে কক্সবাজারের পেকুয়ায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সকালে এ ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর সিপিএসসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, বুধবার সকালে পেকুয়ার মগনামা ঘাট এলাকায় কিছু জলদস্যু অস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছে বলে তাদের কাছে খবর আসে। এর ভিত্তিতে তারা সেখানে অভিযান চালান। এ সময় র্যাবের অবস্থান টের পেয়ে জলদস্যুরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। আত্মরক্ষায় র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। পরে ঘটনাস্থলে দু’জনের মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, নিহতরা জলদস্যু এটা নিশ্চিত। তবে তাদের নাম এখনও জানা যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি ওয়ান শ্যুটার গানসহ আটটি অস্ত্র ও ২৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে একই জেলার টেকনাফে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই রোহিঙ্গা যুবক নিহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে এক লাখ ৯০ হাজার ইয়াবা ও ধারালো দুইটি কিরিচ উদ্ধার করা হয়। বুধবার ভোরে উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাংখালি এলাকার নাফ নদীতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মো. তাহেরের ছেলে মোহাম্মদ ইলিয়াস (১৮) ও বালুখালী ক্যাম্পের মো. ইদ্দিসের ছেলে মো. ফারুক মিয়া। মিয়ানমারে সৃষ্ট ঘটনায় ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্টের পর তারা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। তখন থেকে মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল বলে জানা গেছে।
টেকনাফ-২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক শরিফুল জমাদ্দার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাতে বিজিবির একটি দল অভিযান পরিচালনা করার সময় টেকনাফ উপজেলার খারাংখালী নাফ নদী সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে দুইজন ব্যক্তি মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। কর্তব্যরত বিজিবির সদস্যরা বাধা দিতে গেলে বিজিবিকে ধারালো কিরিচ ও দেশীয় অস্ত্র দ্বারা আক্রমণ করে। এ সময় আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। এ ঘটনায় মিয়ানমারের দুইজন রোহিঙ্গা নাগরিক ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। পরে তল্লাশি চালিয়ে এক লাখ নব্বই হাজার পিস ইয়াবা ও দুইটি ধারালো কিরিচ উদ্ধার করা হয়।