পাবনা শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এক সময়ের প্রমত্তা ইছামতি নদী অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, পুনঃখনন, দূষণমুক্তসহ প্রবাহমান করার দাবিতে ১২ ঘণ্টার অনশন কর্মসূচি পালন করছে সচেতন পাবনাবাসী।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে মধ্য শহরে নদীর পারে এই ব্যতিক্রমী অবস্থান অনশন কর্মসূচিতে বসেন তারা। সন্ধ্যার দিকে পাবনা সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স ইছামতি নদী খনন এবং দুষনমুক্ত করার আশ্বাস দিয়ে পানি পান করিয়ে অনশনকারীদের অনশন ভঙ্গ করান।
এ সময় বক্তব্য রাখেন ইছামিতি নদী রক্ষা আন্দোলনের নেতা দেওয়ান মাহাবুবুল ইসলাম, পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক এবিএম ফজলুর রহমান, ডা. আহম্মেদ তাউস লিঙ্কন, অধ্যাপক দেওয়ান আজিজুল ইসলাম, পাবনা সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান শাওয়াল বিশ্বাস, পাবিপ্রবি জনসংযোগ কর্মকর্তা ফারুক হোসেন চৌধুরী, নারী অধিকারে সোচ্চার মাহবুবা কাজল, রাশিদুর ইসলাম বিটুল, পাবনা পৌর কাউন্সিলর হাবিবুর হাসান রবিন, সাংস্কৃতি কর্মী শিশির ইসলাম, মুক্তাদির রহমান প্রমুখ।
ইছামতি নদী রক্ষার আন্দোলন কর্মসূচীর সঙ্গে একত্বতা প্রকাশ করে পাবনা সদরের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, এই পাবনা শহর আমাদের, এই নদী আমাদের সকলের। এবার আমরা সরকারের কাছে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা পাঠিয়েছি। এই নদীতে পানির ব্যবস্থার জন্য সরকারের কাছে আমরা লিখিত প্রস্তাব পাঠিয়েছি।
আশা করছি খুব অল্প দিনের মধ্যে ইছামতি নদী খনন কার্যক্রর্ম শুরু করা হবে। নদীর দুই ধার দিয়ে চলাচলের রাস্তা তৈরি করা হবে। শহরকে যানজট মুক্ত পরিচ্ছন্ন শহর করা হবে।
ঐতিহ্যবাহী এই ইছামতি নদী ৪৪ কি.মি. যার প্রায় ১১ কিলোমিটার নদী শহরের মধ্য দিয়ে শহরতলী হয়ে পদ্মার সাথে মিশেছে। এই ইছামতি নদীকে ঘিরে একসময় এই পাবনা শহরের ব্যবসাবাণিজ্য গড়ে উঠে। আর আজ নদীর উৎসমুখ বন্ধ করে নদীর দুই পারে অবৈধ দখলদাররা গড়ে তুলেছে বাণিজ্যিক ভবন আর বসতি। পাবনার বুক জুড়ে যে কয়েকটি নদী বয়ে চলে, তার মধ্যে পদ্মা, মেঘনা ও ইছামিত অন্যতম। ৪৪ কিলোমিটার ইছামিতি নদী এখন মড়া খালে পরিণত হয়েছে। শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা ইছামিতি নদী এখন দেখে বোঝার উপায় নেই এটি নদী না ক্যানেল।
মৃত ইছামিতি নদীর বর্জ আর দূষনে পৌরবাসী আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। মশা মাছি আর আর্বজনায় ইছামিতি নদী এখন খালে পরিণত হয়েছে।
এই অনশন কর্মসূচির পর যদি কোন ধরনের পদক্ষেপ না আসে তবে আগামীতে ৭২ ঘন্টার অনশনসহ আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দেন নদী রক্ষায় আন্দোলনরত পাবনাবাসী।