ঢাকা: গত ১৪ ফেব্রুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর থেকে তুমুল উত্তেজনার মধ্যে আলোচনার টেবিলে বসতে যাচ্ছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। কর্তারপুর করিডোর ইস্যুতে আগামী ১৪ মার্চ ওয়াগা-আটারি সীমান্তে দুই দেশের কর্মকর্তারা বৈঠকে বসবেন বলে জানানো হয়েছে। তবে আলোচ্যসূচিতে নেই কাশ্মীর ইস্যু। এরমধ্যেই পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতের হামলাস্থলের স্যাটেলাইট ছবিতে, বিস্ফোরণের স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে বলে দাবি করেছেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছেন, ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই পাইলট অভিনন্দনকে মুক্তি দিয়েছে পাকিস্তান।
বুধবার তামিলনাড়ুর বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রথমবারের মতো মুখ খোলেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের আটক এবং মুক্তির বিষয়ে। বলেন, তার সরকারের কূটনৈতিক সাফল্যের ফল পাইলট অভিনন্দনের মুক্তি।
ভারত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, দুইদিন আটক রাখার পর পাইলট অভিনন্দকে কিভাবে মুক্তি দেওয়া হলো তা আর পুনরাবৃত্তি করতে চাই না। সারা পৃথিবী জানে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতার কথা। শ্রীলঙ্কায় আটক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মৎসজীবীদের ছাড়িয়ে আনা হয়েছে। আমাদের তৎপরতার কারণে সৌদি আরব প্রায় ৮৫০ ভারতীয় বন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে।
বিমান হামলার পরও পাকিস্তানের বালাকোটের জঙ্গি আস্তানা অক্ষত রয়েছে, বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এমন প্রতিবেদন মানতেই চাইছে না ভারত। রয়টার্স স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করার পর থেকেই ভারতীয় গণমাধ্যম এবং বিশ্লেষকরা বিভিন্ন যুক্তির মাধ্যমে তা খণ্ডনের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
ভারত প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক এয়ার কমোডোর পি দীক্ষিত বলেন, ভারতের বিমান বাহিনী অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে পাকিস্তানের অভ্যন্তরের জঙ্গি আস্তানায় হামলা চালিয়েছে। স্যাটেলাইট চিত্রে তার স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। ছাদের ওপর বেশকিছু রয়েছে দাগ রয়েছে। তাঁবুগুলোও অদৃশ্য। তবে দেওয়াল এবং ভবনটি অক্ষত রয়েছে।
এদিকে পাকিস্তান জানিয়েছে লাহোরের একটি শিখ মন্দিরে ভারতীয়দের ভ্রমণ নিয়ে আলোচনা করতে একটি প্রতিনিধি দল আগামী ১৪ মার্চ ভারতে সফর করবেন। ওয়াগা-আটারি সীমান্তবর্তী এলাকায় করতাপুর করিডোর নিয়ে বৈঠক করবেন দুই দেশের কর্মকর্তারা।
পাকিস্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি বলেন, ভারতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রাষ্ট্রদূত সোহাইল মাহমুদ এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দুইদিনের মধ্যেই আমাদের রাষ্ট্রদূত নয়াদিল্লী ফিরে যাবেন। এরপরই দুই দেশের বৈঠকের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যকার উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করায় যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্র দেশগুলোর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী।