প্রাণকৃষ্ণ বিশ্বাস প্রান্ত, বৃহত্তর বরিশাল ব্যুরো প্রধান ঃ পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বহমান তালতলা নদীর ভাঙনের কবলে নাচিয়া বাজারের কয়েকটি দোকান সহ হিন্দুধর্মীয় সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, এখনই নেয়া উচিত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।
ঐতিহ্যবাহী মালিখালী ইউনিয়নের বেচাকেনার প্রধানতম স্থান সাচিয়া বাজার। এ বাজারের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে জানা যায় বাজারটির সিংহভাগই চলে গেছে তালতলা নদীর গর্ভে। যুগ যুগ ধরে এ বাজারটি ভাঙনের স্বীকার হলেও এ পর্যন্ত বাজারটি রক্ষা করার জন্য মুখে মুখে আলোচনা উঠে এলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ বা উদ্যোগ গ্রহণ করেননি কোন রাজনৈতিক মহল কিংবা স্থানীয় সুধীবৃন্দ। এমনকি নেওয়া হয়নি কোন স্থায়ী পরিকল্পনা। ফলে বছর বছর ধরে বাজারটি ভাঙতে ভাঙতে মূল বাজার এখন নদীর অপর পারে চর হিসেবে জেগে আছে।
মুরব্বীদের মুখে জানা যায় ব্রিটিশ আমলে ইউনিয়ন কাউন্সিল ভবনটি ছিল সাচিয়া বাজারের নদী পার সংলগ্ন। যা ভাঙন কবলিত হয়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক ব্যবসায়ীর দোকান নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এভাবে অতীত থেকেই চলছে তালতলা নদীর ভাঙনের পালা যা সাচিয়া বাজারকেই ক্ষত বিক্ষত করে আসছে বারবার। দু তিন বছর আগে নদী পারের মসজিদটি ভাঙন কবলিত হয়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এভাবে একের পর এক বাজারটি নদী গর্ভে হারাচ্ছে। মালিখালী ইউনিয়নের প্রবীন ব্যক্তিত্ব মালিখালী ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি জনাব ননী গোপাল মোহান্ত’র নাতনীকে নিয়ে নদীপারস্থ দুর্গামন্দিরে চলমান সঙ্গীত একাডেমীতে গান শিখাতে নিয়ে এলে সেখানে আমার সাথে দেখা হয়। তিনি আমাকে ভাঙন কবলিত দোকান ও মন্দিরটির অবস্থা পরিদর্শন করান এবং মাননীয় গনপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম এমপি মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করতে অনুরোধ করেন।
সোমবার ঢাকাতে মন্ত্রী মহোদয়ের কনিষ্ঠ ভ্রাতা এস এম নওশের বাদশা শামীম এর সাথে দেখা করে উক্ত বিষয়টি অবগত করি। তিনি বলেন বিষয়টি অতীব জরুরী। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করলেন মন্ত্রী মহোদয়ের মাধ্যমে এটি সমাধান করে দিবেন। মঙ্গলবার কথা হলো মন্ত্রী মহোদয়ের জেষ্ঠ মেজভ্রাতা এস এম নজরুল ইসলাম বাবুল ভাইয়ের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়ে প্রসঙ্গ ক্রমে বিষয়টি চলে আসলে তিনি বলেন যেকোন উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য মন্ত্রী মহোদয় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সাচিয়া বাজরের ভাঙনের বিষয়টা বহুদিনের সমস্যা। এটা সমাধান অতীব জরুরী। তিনি বলেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবর আপনারা আবেদন করেন, এটা অবশ্যই মন্ত্রী মহোদয়ের মাধ্যমে আমরা সমাধান করব। তিনি বলেন বিগত দশ বছরে এলাকার উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়েছিল। আমাদের মন্ত্রী চান এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন।
তালতলা নদী ভাঙনের হাত থেকে সাচিয়া বাজারকে রক্ষা করা সময়ের যথার্থ দাবী। খুব শিঘ্রই প্রয়োজন একটি স্থায়ী ভাঙন রোধ প্রাচীর তৈরী করে নদী ভাঙনকে রুখে দেয়া। এটা সম্ভব হলে বাজারটি রক্ষা পাবে তালতলা নদীর ভাঙনের করাল গ্রাস থেকে।