ষ্টাফ করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর অফিস: আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের দুই জন চেয়ারম্যান প্রার্থী। একজন দল মনোনীত সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে প্রার্থী, আরেকজন তৃনমূল আওয়ামীলীগ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী। এই দুই জন প্রার্থীর নেপথ্যে কারা! তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা শুরু হয়েছে। ভোটাররা বলছেন এটা কোন খেলা শুরু হল? এর পিছনে কে বা কারা?
জানা গেছে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রিয় মনোনয়ন বোর্ড শ্রীপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ জলিলকে। আবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সামসুল আলম প্রধান। তৃনমূল আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে তিনি প্রার্থী হয়েছেন বলে প্রচার হচ্ছে। ফলে আওয়ামীলীগ ও তৃনমূল আওয়ামীলীগ নামে দুটি সংগঠনের দুই প্রার্থী না একই সংগঠনের দুই প্রার্থী, তা নিয়ে আলোচনা আসাই স্বাভাবিক। যদিও তৃনমূল আওয়ামীলীগ নামে কোন সংগঠন নেই। আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতীক নৌকা আর তৃনমূল আওয়ামীলীগের প্রতীক হবে স্বতন্ত্র কোন প্রতীক। মূলত তৃনমূল আওয়ামীলীগ নামে কোন রাজনৈতিক সংগঠন নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত নয় বিধায় এই ধরণের সমর্থনপুষ্ট কোন প্রার্থীর প্রতীক হবে স্বতন্ত্র প্রতীক। অর্থ্যাৎ আওয়ামীলীগের দুই প্রার্থী একজন দলীয় প্রতীক নৌকা ও আরেকজন স্বতন্ত্র প্রতীকে একই পদে প্রার্থী।
সুতরাং দৃশ্যমান হল যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি নির্বাচন করছেন দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে। এটা এখন পরিস্কার।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গাজীপুরের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি রুমানা আলীর সমর্থক হিসেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আঃ জলিল। আর স্বতন্ত্র হিসেবে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন এডভোকেট সামসুল আলম প্রধান। গাজীপুর-৩(শ্রীপুর) আসনের বর্তমান এমপি ইকবাল হোসেন সবুজ সমর্থকদের ফেইসবুক আইডিগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সামসুল আলম প্রধানের পক্ষে আছেন সবুজ সমর্থকেরা।
পর্যালোচনা দেখা যায়, ২০০৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান হন ইকবাল হোসেন সবুজ। পরবর্তি নির্বাচনে চেয়ারম্যান হন আঃ জলিল। ওই নির্বাচনে ইকবাল হোসেন সবুজ দলীয় উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে জলিলকে সমর্থন করে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যান। কিন্তু সবুজ মাঠ ছাড়ার আগে সংঘটিত হয় একটি হত্যাকান্ড এবং সবুজ ও শ্রীপুর পৌর সভার মেয়র আনিছুর রহমান হন আসামী। ওই নির্বাচনে ছাত্রলীগ নেতা আলামিন নিহত হয়ে চলে যান পরপারে। সবুজ-জলিল দ্বন্ধে চিরদিনের জন্য আলামিন বিদায় নেন। আলামিনের রক্তের বিনিময়ে জলিল-সবুজ দ্বন্ধের মাঠ পর্যায়ের উত্তেজনা প্রাথমিকভাব অবসান হলেও মামলা বিচারাধীন।
এই অবস্থায় এবারও উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দুইজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন, কর্মীর রক্তের বিনিময়ে যেখানে প্রাথমিক শান্তি তৈরী হয়, সেখানে সময় থাকতেই সমস্যা সমাধান হওয়া উত্তম। এতে রক্ত ঝরার সম্ভাবনা কমে যায়।
সাধারণ ভোটারার বলছেন, শ্রীপুর উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের একজন প্রার্থী থাকা মঙ্গলজনক। না হয় অতীতের মত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। আর অকালে হারিয়ে যাওয়া নতুন কোন আলামিনের জন্ম হওয়া থেকে শ্রীপুরবাসাী রক্ষা পাবে।