হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার থেকে দলগ্রাম পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের সরঞ্জামাদি ব্যবহারের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ করেছে এলাকাবাসী।
একাধিকবার উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান মাহবুবের কাছে গেলেও কোন প্রতিকার না পেয়ে মঙ্গলবার(২৬ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ২টার দিকে তুষভান্ডার-দলগ্রাম সংস্কারধীন সড়কে মানববন্ধন করে।
এতে মনববন্ধনে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী অপসারণ না করলে পাকা রাস্তা সংস্কার কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুশারী দিয়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার প্রাণকেন্দ্র তুষভান্ডার থেকে দলগ্রামের মূল রাস্তার পাশেই (ইউনও) উপজেলা পরিষদের অফিস অথচ নিম্নমানের ইট দিয়ে রাস্তার সংস্কারের কাজ করছে ঠিকাদার। এলাকাবাসী একাধিকবার প্রকৌশলীকে জানালেও কোন ধরণের পদক্ষেপ নেয়নি।
এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মোড় থেকে দলগ্রাম পর্যন্ত ৭৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১ কিলো ৫শত মিটারের রাস্তা নির্মানের কাজ পায় কুড়িগ্রাম লাইসেন্সকৃত জহুরুল হক দুলাল।
কুড়িগ্রামের ঠিকাদার দুলালের কাছে কাজটি কিনে নেন লালমনিরহাটের ঠিকাদার রেজাউল করিম স্বপন। কিন্তু রাস্তাটি নির্মাণ করেন স্থানীয় ঠিকাদার ও তার সহযোগীরা।
সরজমিন দেখা যায়, ওই ঠিকাদারের প্রতিনিধি নিম্নমানের ইট ও পরিমাণে কম বালু দিয়ে রাস্তাটি সংস্কার করায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
রাস্তায় এতই নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে যা হাতে নিয়ে ওপর থেকে মাটিতে ছেড়ে দিলে ওই ইট গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে যায়। এদিকে ওই সড়ক সংস্কারে নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া ডাক্টার. আফজাল হোসেন বলেন, কাজের শুরু থেকেই নিন্মমানের ইট ব্যবহার করছেন ঠিকাদার।
বিষয়টি একাধিকবার ফোনে এলজিইডিতে জানানো হয়। ঠিকাদারকে ডেকে সব ধরনের আশ্বাস দিয়ে সঠিকভাবে কাজ করার অনুরোধ জানানো হয়েছিলো গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এলাকাবাসীর দাবি না মেনে অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সাইফুল ইসলাম বলেন, যে ইট দিয়ে রাস্তার কাজ করছে তাতে এক মাসও টিকবে না রাস্তা। ইট না পোড়ামাটি, হাতের চাপে ইট গলানো যায়।
মেসার্স দুলাল এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার রেজাউল করিম স্বপন মিয়া অভিযোগ অস্বীকার বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ মিথ্যা আমরা সব সময় ভালো ইট-খোয়া দিয়ে রাস্তা নিার্মাণ করে থাকি।
তাছাড়া প্রকৌশলীর চুক্তি অনুযায়ী রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদের কাছে নিম্নমানের কাজ করার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি এ বিষয় কিছু বলতে পারছি না। সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হকের সাথে যোগাযোগ করুন।
উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী ফজলুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগযোগ করা চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসান বলেন, নিম্নমানের ইট-খোয়া দিয়ে রাস্তা সংস্কার করছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।
এলাকাবাসীকে আশ্বাস দিয়েছি ঠিকাদার যেন ইট-খোয়া অপসারণ করে নেন।