পাকিস্তানে বিমান হামলায় ৩০০ জঙ্গি নিহত: ভারত

Slider সারাবিশ্ব


ঢাকা: পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অব কন্ট্রোল) ভারতের বিমানবাহিনীর হামলায় ৩০০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারত। আজ মঙ্গলবার ভোরে পাকিস্তানের জয়েশ-ই-মোহাম্মদ, হিজবুল্লাহ মুজাহেদীন ও লস্কর-ই-তায়েবার স্থাপনায় এ বিমান হামলা চালানো হয়। টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বিজয় কেশব গোখলে সরকারি এক বিবৃতিতে জানান, নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জয়েশ জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে বিমানবাহিনী। নিহত হয়েছেন জয়েশ-ই-মোহাম্মদের সিনিয়র কমান্ডাররা।

ভারতীয় বিমানবাহিনী বলছে, তাদের ১২টি মিরেজ ২০০০ জেট বিমান এ হামলায় অংশ নেয় এবং ১ হাজার কেজি বোমা বর্ষণ করে অনেক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। তবে পাকিস্তান এ ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি অস্বীকার করেছে। হামলার পর নিজ বাসভবনে নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমনসহ উচ্চপদস্থ মন্ত্রীদের নিয়ে জরুরি নিরাপত্তা বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রীর ওই বৈঠকের পর বিজয় কেশব গোখলে বিবৃতি দেন বলে আনন্দবাজার অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়।

১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফ গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়। এর জবাব দিতেই ভারত এ হামলা চালিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের খবরে জানানো হয়, ভারতের বিমান হামলার বিষয়টি টের পাওয়ার পর পাকিস্তানি সেনারা প্রতিরোধের চেষ্টা চালায়। তাদের তরফে পাঠানো হয় এফ-১৬ যুদ্ধবিমান। কিন্তু ভারতের শক্তি দেখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় পাকিস্তানি সেনারা। কোনো রকম প্রতিরোধের সাহসই তারা দেখাতে পারেনি।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে জানানো হয়, মঙ্গলবার ভোরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর বৈঠকে বসেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নিরাপত্তাবিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটির ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালসহ ভারত সরকারের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা।

ভারতীয় বিমানবাহিনী বলছে, মঙ্গলবার এই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করা হয়। ভোররাত সাড়ে তিনটা নাগাদ পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে পড়ে বিমানসেনার মিরাজ ২০০০ ফাইটার বিমান। বেছে বেছে হামলা চালানো হয় জয়েশ-ই-মোহাম্মদের জঙ্গি ঘাঁটিগুলোতে। পুলওয়ামার হামলার পর জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর জঙ্গি ঘাঁটিগুলো পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ফলে বেশ খানিকটা ভেতরে ঢুকে হামলা চালানো হয়। বালাকোট খাইবার-পাখতুনওয়ার একটি শহর। যা নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার ভেতরে। সেখানেই জয়েশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান জঙ্গিশিবির রয়েছে। ফলে সেখানে গিয়েই এই হামলা চালানো হয়। মঙ্গলবার ভোররাতে মুজফ্ফরাবাদ ও চকৌটিতে জঙ্গিশিবিরে হামলা চালানো হয়েছে। ২১ মিনিট চলেছে এ হামলা।

পাকিস্তান বলছে, হামলা চালানো হয়েছে পাকিস্তানের বালাকোটে। পাকিস্তানি বিমানবাহিনী প্রতিরোধ করেছে। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে তাদের দাবি।

ভারতীয় বিমান হামলার পর জরুরি বৈঠক ডেকেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। পাকিস্তানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে বসেছে ওই বৈঠক। বৈঠকে অংশগ্রহণ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক বিদেশসচিব ও কূটনীতিকেরা।

ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের আইএসপিআরের ডিরেক্টর জেনারেল আসিফ গফুর টুইটে বলেছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করে ভেতরে ঢুকেছে ভারতের বিমানবাহিনী। পাকিস্তানি বিমানবাহিনী দ্রুত ও কার্যকর সাড়া দেওয়ায় তারা পিছু হটেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *