প্রাণকৃষ্ণ বিশ্বাস প্রান্ত, বরিশাল বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান ঃ হাজার হাজার ভক্তের আগমনে অকৃতিম ভালবাসা ও সম্প্রীতির মধ্যদিয়ে প্রয়াত এমপি নিরোদ বিহারী নাগের ১৮ তম তিরোধান দিবস তাঁর পূন্যভূমিতে মহাসমারোহে উদযাপিত হয়েছে।
২২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার অধিবাস ও প্রয়াতের বংশীয় সম্মেলন এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা হয়।
২৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকাল থেকে দলে দলে হরিভক্তদের আগমনে এ তীর্থভূমি ভক্তারন্যে পরিনত হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভক্ত মতুয়াদের আগমন ঘটতে থাকে। বিশাল পূন্যভূমিতে তিল ধারনের ঠাঁই ছিলনা। মুখে ছিল হরিনাম সাথে ডংকা, ঢাক, কাসী, মন্দিরা, নিয়ে ভক্তরা পুষ্প-নিরোদ পূন্যভূমিকে মধুর বৃন্দাবনে পরিনত করে। ভক্তরা নিরোদ বিহারী নাগের পুত্র দীপংকর নাগকে আলিঙ্গনের মাধ্যমে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। নিরোদ বিহারী নাগ ছিলেন ইউনিয়নের শিক্ষার উন্নয়নেসুযোগ্যপথদ্রষ্টাকীর্তিমান প্রতিভাবান ব্যক্তিত্বের নাম আমরা মালিখালীবাসী আমাদের মন ও মননে ধারনকরি তন্মধ্যে নিরোদ বিহারী নাগ এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এ মানুষটির বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব মালিখালীর ইতিহাসে গৌরবদীপ্ত মহিমায় চির ভাস্বর। ‘আপোষহীন, দৃঢ় চেতনাদীপ্ত, নিরহংকারী, তুখোড় রাজনীতিজ্ঞ সর্বোপরি সমাজ সচেতন এক মহান ব্যক্তিত্বের নাম নিরোদ বিহারী নাগ।পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলাধীন ২নং মালিখালী ইউনিয়নের সাচিয়া গ্রামে ১৯৩২ সালে জন্মগ্রহণ করেন।ছেলেবেলা থেকে মেধাবী ছাত্র হিসেবেই মালিখালীর মানুষের প্রিয়ভাজন ছিলেন তিনি। একজন প্রতিভাবান হিসেবে তিনিই মালিখালীর প্রথম ছাত্র যিনি ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল লাভে সমর্থ হন।মাত্র ২০ বছর বয়সে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রনেতা হিসেবে ১৯৫৩-১৯৫৪ ও ১৯৫৪-১৯৫৫ সালে পরপর দুই টার্ম ঢাকসু’র ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ও ১৯৬৭ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে ন্যাপ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নাজিরপুর-স্বরূপকাঠি নির্বাচনী এলাকা থেকে এমপি নির্বাচিত হন।এ সময়ে তিনি স্বরূপকাঠি কলেজ প্রতিষ্ঠা সহ এ অঞ্চলের বেশ উন্নয়ন করেন।মাটিভাঙ্গা ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তাঁর যথেষ্ট অবদান।
১৯৬৪ সালে কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ও তৎকালীন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিরোধান দিবসের এই মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে ডেপুটি সেক্রেটারি জনাব সমীর কুমার বিশ্বাস সম্পাদিত নিরোদ বিহারী নাগের জীবন চরিত সম্বলিত একটি প্রাক স্বারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন হয়। ডা. দীপংকর নাগের উপস্থিতিতে জনাব সমীর কুমার বিশ্বাস স্থানীয় সুধীজনদের নিয়ে স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।