তার আগেই সবশেষ’

Slider বাংলার মুখোমুখি


ঢাকা: পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় চুড়িহাট্টা জামে মসজিদ। কয়েকটি সরু রাস্তার মিলনস্থল। আসগর লেন, নবকুমার দত্ত রোড ও হায়দার বক্সলেন। সবগুলোই গলিপথ। একপাশে ওয়াহিদ ম্যানশন। অন্যপাশে বাচ্চু মিয়ার বাড়ি। বিপরীত পাশে চুড়িহাট্টা জামে মসজিদ। ওয়াহিদ ম্যানশন, বাচ্চু মিয়ার বাড়ি ও চারপাশের বাড়িগুলো পুড়ে ছাই।

আতঙ্কিত মানুষের ভিড়। নিরাপত্তা কর্মীরা চারপাশের সড়কে নির্দিষ্ট স্থানে সড়কে বেরিকেড দিয়ে রেখেছেন। ফায়ার সার্ভিস কর্মী এবং স্বেচ্ছাসেবীরা ভিতরে এখনো খুঁজে দেখছে কোন লাশ পড়ে রয়েছে কিনা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাচ্চু মিয়ার বাড়ির নিছে ছিল দাহ্য পদার্থের দোকান। এগুলো সবই এখন ধবংস্তুপ। আসগর লেনে এখন পড়ে আছে প্রাইভেট কার, মোটর সাইকেলে ও রিকশা ভ্যানের অঙার। পোড়া বাড়িগুলো মানুষহীন নিরব নিস্তব্ধ। এসব বাড়ি এবং মসজিদের নিচে ছিল বিভিন্ন ধরণের মার্কেট ও দোকান। রাস্তার উপর বিল্ডিং ভেঙে অংশবিশেষ পড়ে রয়েছে।

চুড়িহাট্টা মসজিদের ইমাম আবদুল হক বলেন, রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়বো ঠিক এমন সময় বিকট শব্দ পাই। মসজিদ থেকে বের হতেই আগুনের লেলিহান শিখা দেখি। আগুনের ধোয়ায় মুহূর্তেই চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। এরপর মসজিদে যারা ছিলাম দ্রুত বের হই। রাস্তা সরু হওয়ায় এখানে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢুকতেও বেগ পায়। ফজরের পরও আমরা আগুন জ্বলতে দেখি।
<
বাচ্চু মিয়ার বাড়ির পাশের বিল্ডিংয়ের বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ বলেন, বাচ্চুর বাড়ির নিচের দোকানটি ছিল দাহ্য পদার্থের। রাস্তায় যে পোড়া পিক-আপ ভ্যানটি পরে আছে ওটা বিস্ফারণ ঘটে প্রথম। এখান থেকে আগুন এসে বাচ্চুর বাড়িতে লাগে। দাহ্য পদার্থ থাকায় মুহূর্তেই পাশের বাড়িগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে।

চুড়িহাট্টা মসজিদের পাশেই মটরসাইকেল ও ব্যাগ রেখে পাশের একটি ভবনে গেয়েছিলেন টাঙাইলের মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, আমি এখান থেকে যাওয়ার ৫ মিনিটের মাথায় একটা শব্দ পাই। এসে দেখি আগুন। হাতে দলিল ও পাসপোর্টের পোড়া অংশ দেখিয়ে বলেন, আমি কিছুই নিতে পারিনি। তার আগেই সবশেষ।

বুধবার রাতে লাগা আগুনের ঘটনায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী ব্রিফিংয়ে জানান, ৭০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আরো লাশ থাকতে পারে। উদ্ধারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত লাশের সংখ্যা জানা যাবে না বলছে ফায়ার সার্ভিস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *