মাসুদ পারভেজ কাপাসিয়া(গাজীপুর)প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের কাপাসিয়ায় অসহায়, প্রতিবন্ধী, সমাজে অবহেলিত অসহায় মানুষ, মাথা গোজার ঠাই টুকু নেই, যাঁদের অন্যের বাড়িতে বা খোলা আকাশের নীচে কিংবা ভাঙা চালার ঘরে থাকতে হয়। যাদের জমি আছে, ঘর নেই এমন গৃহহীন নাগরিকদের বেছে বেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব অর্থায়নে থাকার ঘর বানিয়ে দিচ্ছেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে নিজস্ব ঘর পেয়ে এসব অসহায়দের জীবনই যেন এখন পাল্টে গেছে।
এ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশের অন্যান্যদের মতো রাজধানীঘেষা গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ৩৭২ অসহায়ের ঠিকানা মিলেছে। তাদের নিজেদেরই হয়েছে এখন ইট সিমেণ্টের তৈরী থাকার ঘর। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রকল্পের আওতায় গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় ইট-টিন সিমেণ্টের ঘর পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে ঘর পাওয়া গৃহহীন লোকজন।
কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাঃ ইসমত আরা জানান, আশ্রয়নের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার এ শ্লোগানকে সামনে রেখে কাপাসিয়া উপজেলায় ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে ওই প্রকল্পের পাকা মেঝসহ ২৪টি বারান্দাসহ টিনের ঘর ও টয়লেট নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে সারাদেশে ৫০ হাজার ঘর নির্মাণ করা হবে। যাদের জমি আছে, কিন্তু ঘর নেই এমন নাগরিকদের জন্য এটি প্রধানমন্ত্রীর উপহার। সরকারের দ্বিতীয় আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় উক্ত অর্থ বছরে ৩৭২টি ঘর নির্মাণ করা হবে। দেশব্যাপী চলা এ প্রকল্পের অধীনে একটি চৌচালা ঘর হবে এক কক্ষের। প্রতিটি ঘরের দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৬ ফুট, প্রস্থ সাড়ে ১০ ফুট। ঘরের পাকা মেঝে, চারদিকে টিনের বেড়া। ঘরের সাথে একটি উন্নত টয়লেটও নির্মাণ করা হবে। এছাড়া সাড়ে ৫ ফুট প্রস্থের একটি বারান্দার রয়েছে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ টাকা। তিনি আরো জানান, উপজেলা পর্যায়ে সরকারী লোকজন জরিপ করে বাছাই করা হয়। জমির মালিকানা নিরংকুশ থাকলে জমির দলিল আর জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি প্রয়োজন হয়। ঘর নির্মাণ কাজ তদারকি করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। এ কমিটি ঘর নির্মাণ কাজের মান ঠিক রাখার জন্য সার্বক্ষণিক তদারকির করছে। প্রকল্পের আওতায় ঘাগুটিয়া ইউনিয়নে ১৫৯ টি ঘর, কড়িহাতা ইউনিয়নে ৫৬ টি ঘর, টোক ইউনিয়নে ৪৫ টি ঘর, দুর্গাপুর ইউনিয়নে ৪৮টি সিংহশী ইউনিয়নে ৮৪টি ঘরসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে মোট ৩৭২ টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। আশা করা যায়, আগামী এক মাসের মধ্যে ঘরগুলো নির্মাণ শেষ করে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের নিকট হস্তান্তর করা সম্ভব হবে।
উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের জাবর গ্রামের মোঃ সোলেমান বলেন, এ ঘর পাওয়াতে আমার অনেক উপকার হয়েছে। এজন্য আমি শেখের বেটি শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই।
সিংহশ্রী ইউনিয়নের বড়বেড় গ্রামের মাজেদা খাতুন বলেন, আমি ও আমার ছেলে কাজ করে খাই। আমাদের ঘর ছিল না। আমার ছেলেকে প্রধানমন্ত্রী একটি পাকা ঘর দিয়েছে। এ ঘরে আমি ও আমার ছেলে একসাথে থাকি। আমি প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করি আল্লাহ তার মঙ্গল কামনা করি।
কড়িহাতা ইউনিয়নের আনজাব গ্রামের রুনা বলেন, আমার বাবার নামে সরকার একটি পাকা ঘর করে দিয়েছে, সাথে একটি টয়লেট আছে। আমরা এখন আশ্রয় পেয়েছি, আমরা অনেক ভাল আছি। আমরা খুব খুশি।
প্রকল্পের বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানুষের কল্যাণমূখী চিন্তার বাস্তবায়ন হচ্ছে এ প্রকল্প। প্রকৃত গৃহহীণ ব্যক্তিগণকে গুনগতমান ঠিক রেখে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। উপকারভোগীরা এর সুফল পাচ্ছে এবং তারা মান সম্পন্ন ঘর পেয়ে সন্তোষ্ট।