ঢাকা ডায়নামাইটস বনাম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ভারসাম্যপূর্ণ দুই দলই বিপিএল-৬ এর ফাইনালের লড়াইয়ে আজ সন্ধ্যা ৭টায় মাঠে নামছে। বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং -তিন বিভাগেই সেরা দুই দল। এই দুই দলেই সবচেয়ে বেশি অলরাউন্ডার।
বিপিএলের মতো সেলিব্রেটি টুর্নামেন্টে শিরোপা জিততে হলে বিদেশি বড় তারকাদের সঙ্গে লোকালদের দাপটও লাগে। এই দুই দলেই ‘দেশি-বিদেশি’ মিলে সুপার কম্বিনেশন। বিদেশিরা সুবিধা করতে না পারলে দেশিরা ম্যাচের হাল ধরার সামর্থ্য রাখেন। তাই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ফাইনালে আজ সেরা দুই দলের লড়াই।
বিপিএলের এই ষষ্ঠ আসরে পঞ্চম বারের মতো ফাইনালে খেলছে ঢাকা। কেবল তৃতীয় আসরে খেলতে পারেনি দলটি। তবে দুই আসরে ঢাকার ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটির নাম ছিল ‘ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স’ আর এখন ঢাকা ডায়নামাইটস। শেষ তিন আসরেই ফাইনালে উঠেছিল ডায়নামাইটস। ২০১৭ সালে দলটি চ্যাম্পিয়ন হয়।
গত আসরে রংপুর রাইডার্সের কাছে ফাইনালে হেরে যায়। এবার সেই রাইডার্সকে হারিয়েই ফাইনালে উঠেছে সাকিব আল হাসানের দল।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দ্বিতীয় বারের মতো ফাইনালে উঠেছে। ২০১৬ সালে প্রথম আসরেই দলটি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। তবে সেবার দলটি খুব একটা ভারসাম্যপূর্ণ ছিল না। কিন্তু মাশরাফি মর্তুজার অসাধারণ নেতৃত্বে জিতে যায়। আর এবার দলে তারকার ছড়াছড়ি। ভিক্টোরিয়ান্সের স্থানীয় তারকারা আছেন ফর্মের তুঙ্গে। অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় দলের আরও দুই তারকা ড্যাসিং ওপেনার তামিম ইকবাল ও তরুণ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এছাড়া এনামুল হক বিজয় ও শামসুর রহমান শুভ দারুণ ব্যাট করছেন। বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে দুজনই সেরা অলরাউন্ডার পাকিস্তানি শহীদ আফ্রিদি ও শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা। ছন্দে রয়েছেন ক্যারিবীয় তারকা ব্যাটসম্যান এভিন লুইস। বল হাতে ফর্মে আছেন আরেক পাকিস্তানি ওয়াহাব রিয়াজও। তবে ইনজুরির কারণে অস্ট্রেলিয়ার তারকা স্টিভ স্মিথ ফিরে না গেলে দলটির একাদশ আরও ভয়ঙ্কর মনে হতো।
ঢাকার একাদশের প্রাণ তিন ক্যারিবীয় তারকা আন্দ্রে রাসেল, কাইরন পোলার্ড ও সুনীল নারিন। তিনজনই অলরাউন্ডার। তবে পোলার্ডকে সচরাচর বোলিং করতে হয় না। কিন্তু নারিন ও রাসেলের জন্য বরাদ্দ থাকে আট ওভার। প্রতি ম্যাচেই তারা পারফর্মও করছেন। ঢাকার চতুর্থ বিদেশি কোটায় দেখা যাবে লঙ্কান ওপেনার উপুল থারাঙ্গাকে।
ডায়নামাইটসের বড় ভরসা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নিজেই। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত এক পারফর্মার। যে কোনো পরিস্থিতিতে ম্যাচের ভাগ্য ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে তার। নেতৃত্বেও দুর্দান্ত সাকিব। বোলিংয়ে তাকে দারুণভাবে সঙ্গ দেন জাতীয় দলের আরেক তারকা রুবেল হোসেন। কোয়ালিফায়ারে রংপুরের বিরুদ্ধে এই রুবেলই তো ম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছেন। বোলিং তরুণ তারকা কাজী অনিকও দারুণ সঙ্গ দিচ্ছেন। ঢাকার উইকেটের পেছনে আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন নুরুল হাসান সোহান। দলের জয়ে ভূমিকা রাখছেন ঢাকার স্থানীয় ক্রিকেটার রনি তালুকদারও।
ফাইনালে আসল লড়াই হবে দুই বন্ধুর মধ্যে ‘সাকিব বনাম তামিম’! জাতীয় দলের সেরা দুই তারকার দিকেই তাকিয়ে থাকবে দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি। তবে আজ অন্যরকম লড়াই হবে দুই স্থানীয় কোচের মধ্যেও ‘খালেদ মাহমুদ বনাম মোহাম্মদ সালাউদ্দিন’।
স্থানীয় ক্রিকেটাররা ফর্মে থাকায় শিরোপার স্বপ্ন দেখছেন ভিক্টোরিয়ান্স কোচ, ‘আমাদের দলীয় সমন্বয়টা খুবই ভালো। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল যে, স্থানীয় খেলোয়াড়রা খুবই ভালো খেলছে। আমি সবসময় একটাই কথা বলি এ ধরনের টুর্নামেন্ট যদি জিততে হয় স্থানীয়দের পারফর্ম করতেই হবে। যেহেতু এবার বাড়তি একজন খেলছে, ৭ জন লোকাল প্লেয়ার তো তাদের পারফর্ম করা খুবই জরুরি। ফরেনারদের উপর পুরো নির্ভর করা যাচ্ছে না। তারা হয়ত আমাদের হেল্প করবে সেই সঙ্গে স্থানীয়রা যদি ভালো খেলে সেটা টিমের জন্য অনেক লাভজনক হয়। আমি মনে করি আমার টিমের মূল স্ট্রেন্থ হচ্ছে লোকাল প্লেয়াররা। ’
দলে বেশি অলরাউন্ডার থাকায় আত্মবিশ্বাসী কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েসও, ‘অলরাউন্ডার যখন দলে বেশি থাকবে তখন স্ট্রেন্থও অনেক বেশি থাকবে। কারণ আপনি অলরাউন্ডারদের বেশি ব্যবহার করতে পারবেন। অপশনটি অনেক বেশি হয়ে যাবে। হ্যাঁ, সাইফুদ্দিন, আফ্রিদি, পেরেরা তিনজন অলরাউন্ডার আছে কুমিল্লাতে। আপনারা জানেন যে সাইফুদ্দিন শুরু থেকেই ভালো পারফর্ম করছে। আমার কাছে মনে হয় অলরাউন্ডারদের পারফর্মেন্সটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ’