ঢাকা:জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে গতকাল ‘নিশীথ রাতের ভোটের প্রধানমন্ত্রী’ তার তামাশার ভাষণে জনগণের সঙ্গে ঠাট্টা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন , জনগণ জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করেছে। আজ নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গতকাল ‘নিশীথ রাতের ভোটের প্রধানমন্ত্রী’ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি তার ভাষণে যারা তাকে ভোট দিয়েছেন এবং যারা দেননি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। দেশের আসল মালিক জনগণের প্রকৃত ভোট দেয়ার অধিকার ও সাংবিধানিক দাবিকে উপহাস করার নতুন মাত্রা যোগ করলেন ২৯শে ডিসেম্বর রাতের ভোটের প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ তেরো সফলতায় বিজয়ী হয়েছে এবং বিএনপি’র সাতটি ব্যর্থতায় পরাজয় হয়েছে। ভোটের আগের দিন রাতে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে এখন তিনি জ্ঞানতাপস সেজে সফলতা-বিফলতার পরিসংখ্যান দিচ্ছেন। তবে প্রধানমন্ত্রী ভোট ডাকাতিতে জড়িত নির্বাচন কমিশন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ দিতে ভুলেননি-আসলে এটিই হচ্ছে তাঁর প্রকৃত ধন্যবাদ।
৩০ ডিসেম্বরের ভোটে জনগণ বিজয়ী হয়নি কিংবা আওয়ামী লীগও বিজয়ী হয়নি, বিজয়ী হয়েছে জনপ্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি বলেন, আসলে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর ভাষন জনগণের সাথে নিচু মানের ‘ঝবহংব ড়ভ ঐঁসড়ৎ’। কয়েক মাস ধরে চালানো মামলা ও গ্রেপ্তারের হিড়িকের সাথে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে নানাবিধ দমন-পীড়ণ ও নিপীড়ণের মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিভিন্ন বাহিনী-এজেন্সি ও দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে চারিদিকে রক্তপাত ও হত্যার মর্মরিত পদশব্দে ভোটের যে নজীর স্থাপন করেছেন সে কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীর। আইনের তোয়াক্কা না করে সন্ত্রাসী কায়দায় ভোট নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করা হয়েছে। নির্বাচনের পূর্বাপর অগুনতি সহিংস সন্ত্রাসের প্রতাপে এখনও জনজীবন নির্ভয়, নিঃশঙ্ক হতে পারেনি। ভয়-কষ্ট-ক্লান্তি ও হতাশার অনুভূতি মানুষের মনে জেঁকে বসেছে।
রিজভী বলেন, জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে গতকাল ‘নিশীথ রাতের ভোটের প্রধানমন্ত্রী’ তাঁর তামাশার ভাষণে জনগণের সাথে ঠাট্টা করেছেন। জনগণ জাতির উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখান করেছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব গত পরশু বলেছেন, বিএনপি ভেঙ্গে যাবে। গতকাল তিনি বলেছেন, বিএনপি’র পরিণতি মুসলিম লীগের দিকে যাচ্ছে কি না সে আশঙ্কা করছেন।
আওয়ামী লীগ তো ভেতর থেকে ভেঙ্গে চুপসে গেছে। সেখানে নানা পন্থী এবং সিনিয়র-জুনিয়র এর নানা ধারা। যে কারণে তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে সুষ্ঠূ নির্বাচন করতে পারেনি, পুলিশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে রাতের আঁধারে জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করতে হয়েছে। পুলিশী ক্ষমতা যখন থাকবে না তখন তো আওয়ামী লীগের বাতি জ্বালানোর লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিএনপি’র মধ্যে কোন বিভেদ নেই। বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারেনি বলেই ওবায়দুল সাহেবের বুকে বড় জ্বালা। এজন্য তিনি বিএনপি’র ছিদ্র খুঁজতে আর্তচিৎকার করছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেবকে মনে রাখার জন্য বলবো-শকুনের দোয়ায় গরু মরে না।