পাবনা শহরের পৈলানপুরে সিএনজি চালিত অটোবাইক স্ট্যান্ডে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় আরো ৫ জন আহত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবলীগ কর্মী অরিন প্রামানিক (৩২) পৈলানপুর মহল্লার মৃত হাসান আলী ভুট্টু প্রামানিকের ছেলে।
আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিহত অরিন ‘অরিন অটোবাইক স্ট্যান্ড’র মাষ্টার ছিল।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবায়দুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাবনা পৌর এলাকার পৈলানপুর মোড়ে সিএনজি চালিত অটোবাইক স্ট্যান্ডের দখল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে আজ দুপুর দেড়টার দিকে দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় উভয় গ্রুপের অন্তত ৫ জন আহত হয়।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে অটোবাইক স্ট্যান্ডের মাষ্টার অরিনকে একা পেয়ে উপর্যপুরি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে মামুন গ্রুপের লোকজন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল হলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাজশাহী নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যে শতাধিক দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। লোকজন দিগবিদিক ছোটাছুটি করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায়। ঘটনার সময় ওই এলাকার ৮/১০টি দোকানপাট ভাংচুর করে উভয় গ্রুপ।
দুই গ্রুপের এক দিকে নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহকারী প্রচার সম্পাদক হাজী শরিফ ও অপরদিকে নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন।
জেলা আওয়ামী লীগের সহকারী প্রচার সম্পাদক হাজী শরিফ বলেন, মামুনের লোকজন বিএনপি জামায়াতের লোকজনকে সাথে নিয়ে পৈলানপুর এলাকায় আমার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত ইয়াকুব আলী স্মৃতি সংঘ ক্লাবে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় আমার লোকজন বাধা দিলে এই সংঘর্ষের শুরু হয়। তারা ক্লাবে থাকা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে।
বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এই ঘটনার সাথে আমার নুন্যতম সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে আমি ঘুম থেকে উঠে যেটুকু শুনেছি সেটা হলো, পৈলানপুর মাঠপাড়া এলাকার লোকজনের কাছে চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এই ঘটনার সাথে আমার বা আমার লোকজনের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
ওসি আরো জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয়দের চাঁদা তোলাকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এখন পর্যন্ত থানায় লিখিতভাবে কোন পক্ষই অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।