বাকৃবিতে ‘সোনালী দল’র শিক্ষকদের শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে বাধা

শিক্ষা

bkriবিজয় দিবস উপলক্ষে শহীদদের বেদিতে ফুল দিতে পারেনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘সোনালী দল’।
শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল দিতে সোনালী দলের নাম ঘোষণা করা হলে জোর করে বেদিতে উঠে পড়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে সোনালী দলের শিক্ষকদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও রাজাকারদের দোসর আখ্যা দিয়ে স্লোগান দেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ ‘মরণ সাগর’ এর পাদদেশে ফুল দেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ‘সোনালী দল’র নাম ঘোষণা করেন। কিন্তু সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সোনালী দলের শিক্ষকদের ধাক্কা দিয়ে সামনে চলে এসে বেদিতে ফুল দেয়। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানান শিক্ষকরা। এক পর্যায়ে জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সোনালী দলের শিক্ষকদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। সোনালী দলের শিক্ষকেরা এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করলেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সোনালী দলকে অনুরোধ জানালেও তারা ফুল না দিয়ে চলে যায়।

সোনালী দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম মর্তুজা বলেন, বিগত বছরগুলোতেও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ফুল দিতে বাধা দেওয়া, কটূক্তি করা, ব্যঙ্গাত্মক আচরণ করেছে। এ বছর যাতে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সেজন্য আগে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবু হাদী নূর আলী খানকে জানানো হয়েছিল। তিনি ছুটিতে আছেন জানিয়ে সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু ফুল দিতে সোনালী দলের নাম ডাকা হলেও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা জোর করে বেদিতে উঠে পড়ে। ফুল দিয়ে নামার সময় কটূক্তিমূলক স্লোগান দিতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেখানে নীরব ভূমিকা পালন করে।

সোনালী দলের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ. কে ফজলুল হক ভুঁইয়া বলেন, স্বাধীনতা দিবসে তাদের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। তিনি এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অবিলম্বে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন। সন্ধ্যায় সোনালী দলের জরুরি সভায় এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মুর্শেদুজ্জামান খান বাবু বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তিদের সঙ্গে নিয়ে যারা রাজনীতি করে, তারা মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করেছেন। শহীদদের অবমাননা করেছেন। তারা ফটোসেশন করার জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করবে তা ছাত্রলীগ কখনো মেনে নেবে না।

তাছাড়া গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়ে রাখা হয়েছিল আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম’ এর পরে শাখা ছাত্রলীগ শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবে।

এর আগে সকাল সাড়ে ৬ টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে বিজয় দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। ৯টায় শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সাড়ে ৯টার দিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল হক। এর পরপরই পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *