হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ বাবার হাত ধরে রাজনৈতিক অঙ্গনে যার পথচলা তিনি সকলের পরিচিত মুখ নুরুজ্জামান আহমেদ। মাঠপর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায় আজকের সমাজ-কল্যাণ মন্ত্রালয়ের পূর্ণমন্ত্রী।
লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসন থেকে দ্বিতীয় বারের মতো নির্বাচিত সংসদ সদস্য নুরুজ্জামান আহম্মেদ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচিনে বিজয়ী হয়ে ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পান।
নুরুজ্জামান আহম্মেদ ১৯৬৫ সালে এসএসসি, ১৯৬৭ সালে এইচএসসি ও ১৯৬৯ সালে বি.কম পাশ করেন।
২০১৮ সালে নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী নজরে আসেন তৃণমূল এ রাজনীতিবিদ।
ফলশ্রুিততে তাকে সমাজকল্যণ মন্ত্রনালয়ের পূর্নমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ এমপি (১৩ জানুয়ারি থেকে ১৯ জানুয়ারি) পর্যন্ত ৭ দিনের সফরে প্রথমবার নিজ জেলা লালমনিরহাট সফরে আসছেন।
(১৩ জানুয়ারি) রবিবার দুপুরে লালমনিরহাট সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন, সুশিল সমাজ ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
মন্ত্রীর সফর উপলক্ষে স্বাগত জানিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে সুসজ্জিত তোরণ নির্মাণ ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে দলীয় ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এবারের মন্ত্রীসভায় দেশের অনেক হেভিওয়েট নেতার ভাগ্যে মন্ত্রিত্ব না জোটলেও বাদ যাননি নুরুজ্জামান আহমেদ।
তাই নুরুজ্জামান আহম্মেদ অনেকটাই ভাগ্যবান এমনটিই ভাবছেন এলাকাবাসী। তার এ সাফল্যে গর্বিত কর্মী- সমর্থকসহ ও সকলেই।
তৃণমূল রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে উপরে উঠে আসা নুরুজ্জামান আহম্মেদ ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত কালিগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং পরবর্তীতে ১৯৯০ ও ২০০৯ সালে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তৃণমূল রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে উঠে আসা এই নেতাকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেয়া এ বারের মন্ত্রীসভায় অন্যতম চমক।
কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুজ্জামান আহম্মেদ বলেন, এর আগে ২০১৪ সালে নির্বাচিত হয়ে তিনি প্রথমে খাদ্য প্রতিমন্ত্রী এবং পরে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন।
মন্ত্রীত্ব পাওয়ার পর গত ৫ বছরে কালিগঞ্জ-আদিতমারী উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন তিনি। ফলে এলাকার মানুষের অনেকটাই দাবিই ছিল যে, তাকে পূর্নমন্ত্রী করার।
নুরুজ্জামান আহম্মেদ এর ছাত্র জীবনেই বাবার হাত ধরে রাজনীতিতে হাতেখড়ি।
এরপর লেখাপড়া শেষ করে পুরো দস্তর রাজনীতিক হিসাবে তৃণমূলের রাজনীতিতে প্রবেশ। উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিরাম গ্রামে ১৯৫০ সালের ৩ জানুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন তিনি।
তার প্রয়াত পিতা আলহাজ করিমউদ্দিন আহম্মেদ এ আসন থেকে ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এ মানুষটি নিজের এলাকায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন অসংখ্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ নানা ধরনের প্রতিষ্ঠান।
বঙ্গবন্ধু ও নিজ পিতার রাজনৈতিক আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই মূলত নুরুজ্জামান আহমেদ ছাত্রজীবনেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য হিসাবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন।
তিনি বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
নুরুজ্জামান আহমেদ ব্যক্তিগত জীবনে দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক।
তার একমাত্র পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদ কালীগঞ্জ কে.ইউ.পি সরকারি কলেজের প্রভাষক ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক।
এ ব্যাপারে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, আমি ও আমার পরিবারের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক কর্মকান্ড-, দুই উপজেলার মানুষের ভালোবাসাসহ সবদিক বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে পূর্নমন্ত্রী করায় আমি আনন্দিত।
আগামীতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যাক্ত করেন এবং সকলের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন।