হাফিজুল ইসলাম লস্কর, সিলেট :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেষ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়েছে পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। ইতিমধ্যে শোনা যাচ্ছে আগামী মার্চ মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের অনেকেই। ইতিমধ্যে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা শুরু করেছেন কেন্দ্রে দৌড়ঝাপ। গতবারের মতো দলীয় প্রতীকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই এবারও উপজেলা নির্বাচন জমে উঠবে বলে অনেকেই ধারনা করছেন। উপজেলা নির্বাচনে স্থানীয় আওয়াামী লীগ থেকে অনেকেই প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিয়ে মাঠে কাজ শুরু করেছেন। এছাড়া প্রার্থী হতে প্রবাস থেকে দেশে আসছেন অনেক প্রবাসীও।
এদিকে, নির্বাচনের দিন-তারিখ ঠিক না হলেও প্রার্থীরা দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগযোগ অব্যাহত রেখেছেন। এলাকার ভোটাদের কাছে তাদের প্রার্থিতা হওয়ার খবরও ছড়িয়ে দিচ্ছেন। উপজেলা সর্বত্রই এখন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা-সমালোচনা। নির্বাচনে একক প্রার্থীকে সমর্থন দিতে দলের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সূত্রে জানা গেছে। প্রার্থী হতে আগ্রহী অনেকেই জানিয়েছেন তারা দলের সমর্থন পেলে নির্বাচনে অংশ নিবেন। আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নড়েচড়ে বসেছেন। প্রকাশ্যে না হলেও তারা নীরবে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের লবিং। এবার কে পাবেন আ.লীগের দলীয় টিকেট তা নিয়ে শুরু হযেছে আলোচনা। কে হবেন নৌকার কান্ডারী? দলের শীর্ষস্থায়ী নেতারা কার হাতে নৌকার দায়িত্ব দেন তা নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে শুরু হয়েছে কানাঘোষা।
আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হওয়া আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, বর্ষীয়ান রাজনৈতিক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট ইকবাল আহমদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হুমায়ুন ইসলাম কামাল, উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও গোলাপগঞ্জ সদর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ সাহেল, গোলাপগঞ্জের কৃতিসন্তান, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ নেতা ও বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ওয়াহাব জোয়ারদার মছুফ, জেলা আ:লীগ সদস্য সৈয়দ মিছবাহ ও সাবেক উপজেলা সেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সামছুল ইসলাম লস্কর আলম।
তবে নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসবে প্রার্থীর সংখ্যা আরও কিছুটা বৃদ্ধি পাবে বলে দলীয় নেতাকর্মীরা মনে করেন। তবে বর্তমানে ওই সাতজন প্রার্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপ্যারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেক প্রার্থীরা প্রকাশ্যে প্রচার-প্রচারনা না করলেও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের সরব উপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। আর তারা এসব সামাজিক অনুষ্ঠানে কৌশলে আগামী উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থিতা হওয়ার ঘোষনা দিয়ে প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানাযায়। আগামী উপজেলা নির্বাচনে আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা ব্যক্তি ইমেজ, দলীয় পরিচয়, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের বিষয়গুলো দলীয় নেতাকর্মীরদের অবহিত করছেন। আগামী উপজেলা নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন বলে তারা জানান।
জানা গেছে, আগামী মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা হবে এমন খবরে দলীয় প্রতীক নৌকা প্রতীক পেতে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা এখন থেকে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরাও নিরব প্রচার-প্রচারনায় চালিয়ে যাচ্ছেন। ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গোলাপগঞ্জ উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা: ১,৫৪,৪০৪ জন । পুরুষ ৭৬,১৮৭ জন এবং মহিলা ৭৮২১৭ জন। এই উপজেলাকে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে। বরাবরই উপজেলায় আওয়ামী লীগ থেকে একাধিক প্রার্থী উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়ন প্রাপ্তির জন্য লড়াই করেন। আর এতে দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। এবারও এর ব্যতিক্রম হবেনা এমটাই মনে করছেন স্থানীয়রা। আগামী উপজেলা নির্বাচনে লড়তে ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ থেকেই রয়েছেন মাঠে। উপজেলা নির্বাচন গতবারের মতো এবারও দলীয় প্রতীকে হওয়ার কথা রয়েছে। যদি দলীয় প্রতীকে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের দ্বিতীয়বারের মতো দলীয় প্রতীকের নির্বাচন হবে এটি। জাতীয় প্রতীকে স্থানীয় নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনায় প্রার্থীরা উপজেলা ও জেলার সিনিয়র নেতাদের কাছে আগাম নিরব লবিং শুরু করেছেন বলে জানাগেছে। তাদের জন্য দলীয় মনোনয়ন লাভই যেন প্রথম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সর্বশেষ কার কপালে জাতীয় প্রতীকের মনোনয়ন রয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছেনা।
এব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রফিকুল হক বলেন, উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে দলের কয়েকজন নেতা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে দলীয় সিন্ধান্ত মোতাবেক চেয়ারম্যান-ভাইস-চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী দেয়া হবে।