ঢাকা:মেয়েদের স্কুল-কলেজে না পড়াতে এবং পড়ালেও সর্বোচ্চ ক্লাস ফোর বা ফাইভ পর্যন্ত পড়ানোর জন্য গতকাল এক মাহফিলে হেফাজত ইসলামের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর উপস্থিত মুসল্লীদের ওয়াদা করানোর প্রতিক্রিয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, ‘আল্লামা শফি ইসলাম জানেন বলে মনে হচ্ছে না। কারণ হাদীসে আছে, প্রত্যেক মুসলমান নর নারীর জন্য জ্ঞান অর্জন ফরজ। বলা আছে তলাবুল এলমা ফরিদাতুন আলা কুল্লি মুসলেমিন ওয়া মুসলেমাতিন।’
তিনি বলেন, ‘নবী (সাঃ) একদিন কিছু সাহাবিদের নিয়ে হাঁটছিলেন। একসময় দেখলেন একজন ব্যক্তি নামাজে মশগুল। আরেক পর্যায়ে দেখলেন এক ব্যক্তি কিছু শিশুদেরকে পড়াচ্ছেন। এ দু’টি দৃশ্য দেখার পর নবী (সাঃ) সাহাবিদেরকে প্রশ্ন করলেন, কোন ব্যক্তি আল্লাহর কাছে প্রিয়। সাহাবিরা উত্তর দিলেন- যিনি নামাজ পড়ছেন, তিনি আল্লাহর কাছে প্রিয়। কিন্তু নবীজী উত্তর দিলেন নামাজী মানুষ আল্লাহার কাছে প্রিয়, তবে প্রিয়তর সে ব্যক্তি যে জ্ঞান শিক্ষা দেয়।
হাদিসে আছে, নবীজী বলেছেন জ্ঞান শিক্ষার জন্য সুদূর চীন দেশেও যেতে হবে। চীনে ইসলাম শিক্ষা দেয়া হতো না তখন, চীনে ধর্ম-সংস্কৃতি শিখানো হতো; কিন্তু নবীজী তা-ও শিখতে বলেছিলেন। অর্থাৎ ইসলাম মুসলমানদেরকে বিশে^র তাবৎ জ্ঞান রাজ্যে বিচরণের নির্দেশ দিয়েছে। বলা বাহুল্য, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা উচ্চতর না হলে জ্ঞানরাজ্যে বিচরণ করা যায় না। সুতরাং জ্ঞানের অন্বেষণের জন্য তাগিদ দেয়া হচ্ছে শুধু পুরুষদেরকে নয় বরং নারীদেরকেও।’
আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত পরিসরে যা বলা হলো- তা দেখে মনে হয় আল্লামা শফি ইসলামের অক্ষর অর্জন করেছেন কিন্তু চেতনা ধারণ করতে পারেননি। কিন্তু এই ইসলাম সম্পর্কে অজ্ঞাত নারী বিদ্বেষী ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ব্যক্তিকে আস্কারা দিয়ে সরকার এ পর্যন্ত এনেছে। আল্লামা শফি অন্ধকারের দিশারী আলোর দিক নির্দেশক নন। তার হাতে ইসলাম ও মানুষ বিপন্ন।’