ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদে গণফোরামের দুই বিজয়ী প্রার্থী শপথ নিতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, তাঁদের দলের দুজনের শপথ নেওয়ার ব্যাপারে দল ইতিবাচক। এ ব্যাপারে তাঁরা শিগগিরই ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, তাঁদের দুই প্রার্থী নিজেদের অর্জনকে ধরে রেখে অর্থপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে বলে গণফোরাম মনে করে।
Eprothom Aloআজ শনিবার রাজধানীর শিশু কল্যাণ পরিষদে গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
অবশ্য নির্বাচনে ড. কামালের নেতৃত্বে অংশ নেওয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপির ৫ নির্বাচিত সদস্য সাংসদ হিসেবে শপথ নেবেন না বলে দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে গণফোরাম প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর মৌলভীবাজার-২ থেকে জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া সিলেট-২ থেকে গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকে জিতেছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান। এ দুজনের শপথ নেওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আমার নিজের ধারণা যে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আমরা নেব। বিষয়টা সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে জানানো হবে।’ তিনি আরও বলেন, তাঁরা প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। এ দুজন সেটাকে ধরে রেখে চেষ্টা করবেন যে তাঁরা একটি অর্থপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। এতে বিএনপির সঙ্গে কোনো সমস্যা তৈরি হবে না বলে মনে করেন তিনি।
তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক কামাল হোসেন নির্বাচনের দিন রাতে সংবাদ সম্মেলনে জানান, তারা ‘প্রহসনের’ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। নির্বাচনের পরের দিন জোটের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে শপথ প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেছিলেন বিষয়টি বিবেচনাধীন। তবে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাঁরা সব ফলই প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেউ শপথ নেবে না।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ঐক্য থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, নীতিগতভাবে তিনি ঐক্যকে রাখার পক্ষে। তবে এগুলো সবই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সরকারে ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ঐক্য কাজ করবে বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া জামায়াত প্রসঙ্গে জানান, জামায়াত ঐক্যফ্রন্টে নেই, ২০ দলের মধ্যে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক, মোস্তফা মহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, এ ছাড়া দুই জয়ী প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, মোকাব্বির খান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু। সেখানে বলা হয়, তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ঐক্যফ্রন্টসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে নামতে দেয়নি ক্ষমতাসীনরা। সেনাবাহিনী নামার পর পরিবেশের উন্নতি হবে বলে মনে করেছিল গণফোরাম। কিন্তু তারা বলে, নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা আইনের আবরনে সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে নিয়ন্ত্রণ করে অকার্যকর করে রাখে।
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে গণফোরাম বলেছে, এ ঘটনায় জনগণের সাংবিধানিক অধিকার, মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার ধর্ষিত হয়েছে।
এ ছাড়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতিসহ নানান অভিযোগ এনে নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানায় গণফোরাম।