প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই বাঙলার গণমানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে মাঠে-ময়দানে অতন্দ্র প্রহরীর মতো ছাত্রলীগের অবস্থান ইতিহাসের সোনার অক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে। শোষক বর্বর পাকিস্তানের শোষণের কালো হাত ভেঙে বাঙলার স্বাধীনতা তরান্বিত করার লক্ষ্যে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে ছাত্রলীগ তার শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ রেখেছে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে উনিশ হাজার নেতাকর্মী হারিয়ে ছাত্রলীগের শোকাহত গর্বের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়েছে। আমরা আমাদের পূর্বসূরিদের জন্য গর্বিত।
এই ভূখণ্ডের বর্ণিল রাজনীতির ক্যানভাসে আমাদের অর্জন সকল রাজনৈতিক সংগঠনকে ছাপিয়ে গেছে বহু আগেই, আমরা ভূমিকা রেখেছি বাঙালির মুক্তির রায়ে, আমার ভূমিকা রেখেছি যুক্তফ্রন্টের বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে। যুক্তফ্রন্টের অভাবনীয় বিজয় সেই সময়ের ছাত্রলীগের গর্বিত সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই অনেকটা সহজ হয়েছে। পাকিস্তানি শোষণের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন-সংগ্রামের প্রথম সারিতে ছাত্রলীগের অবস্থান বাঙলার গণমানুষকে নতুন আলোর সন্ধান দিয়েছিলো। ১৯৭০-এর নির্বাচনে ছাত্রলীগের নিরলস প্রচেষ্টায় আর বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্বের কারণে পাকিস্তানি শাসক মুসলিম লীগের করুণ পতন হয়। বাঙালির সেই অভাবনীয় সাফল্যেই মুক্তির দুয়ার খোলে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ, এখানেও ছাত্রলীগের প্রাধান্য। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাঙলা গড়ার লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেয় ছাত্রলীগ।
বিজয় নিশ্চিত করেই উনিশ হাজার সদস্যকে হারিয়ে ঘরে ফিরে আসে বাঙলার গর্বিত সন্তানেরা।
রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বাঙলার প্রতিটি সাধারণ নির্বাচনে। স্বাধীন বাংলাদেশেও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের প্রধান ভ্যানগার্ড হিসেবে ছাত্রলীগ প্রতিটি নির্বাচনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এর ব্যাতিক্রম ঘটেনি। মাঠ পর্যায়ে প্রচার ও প্রচারণার কাজে প্রধান ভূমিকা পালন করে শোভন-রাব্বানীর নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের সংগ্রামী সভাপতি ও বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদকদ্বয় চষে বেড়িয়েছেন টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, বাঙলার প্রতিটি ঘরে ঘরে দেশরত্ন শেখ হাসিনার উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শভিত্তিক প্রচারণায় ব্যাপক ভূমিকা পালন করে ছাত্রলীগ। সারা বাংলাদেশের প্রতিটি নির্বাচনী আসনে ছাত্রলীগের সমন্বয় কমিটি করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন শোভন-রাব্বানী।
তীব্র শৈতপ্রবাহের মধ্যেও ছাত্রলীগ পরিবারের নিবেদিতপ্রাণ সদস্যরা প্রতিটি ভোটরের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন, ভোট চেয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নৌকা প্রতীকে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে খেয়ে না খেয়ে ছাত্রলীগের এই প্রচারণার ফলেই আজকের বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক দৃঢ়তার বলেই পুরো বাঙলার প্রান্তিক মানুষেরা বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে নব বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নিরলসভাবে কাজ করে যাবে শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার যুগান্তকারী আবিস্কার শোভন-রাব্বানী জুটি ছাত্রলীগকে আরও অনেক দূর নিয়ে যাবেন, এই বিশ্বাস আমাদের সকলেরই আছে। এই ছাত্রলীগ পরিবারের একজন সদস্য হতে পেরে আজ গর্বিত। জয় বাঙলা, জয় বঙ্গবন্ধু; জয়তু শেখ হাসিনা।