ঢাকা:জাতীয় পার্টি (জাপা)-এর পরবর্তী চেয়ারম্যান হবেন জিএম কাদের। এরশাদের অবর্তমানে তিনি পার্টির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। গতকাল রাতে জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। এরশাদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি দেলোয়ার জালালীর পাঠানো ‘জাতীয় পার্টির জন্য ভবিষ্যৎ নির্দেশনা’- শিরোনামের চিঠিতে এরশাদ বলেন, ‘আমি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মী-সমর্থকদের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখছি যে, আমার অবর্তমানে পার্টির বর্তমান কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আশা করি, পার্টির জাতীয় কাউন্সিল আমার মতো তাকেও চেয়ারম্যান নির্বাচিত করে পার্টির সার্বিক- দায়িত্ব অর্পণ করবে। পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যতদিন দায়িত্ব পালন করবো- জনাব গোলাম মোহাম্মদ কাদের আমাকে সহযোগিতা করবে।
জাপা সরকারি নাকি বিরোধী দলে জানা যাবে আজ
জাতীয় পার্টি (জাপা) সরকারি দলে থাকবে নাকি বিরোধী দলে যাবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে আজ। দুপুরে পার্টির বনানী অফিসে অনুষ্ঠিত পার্টির নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সঙ্গে যৌথ সভায় এ বিষয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এরপরে মহাজোটের সঙ্গেও এ নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা করবে জাপা।
গতকাল জাতীয় পার্টির ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাপা চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় এক আলোচনা সভায় মহাসচিব মশিউর রহামান রাঙ্গা এসব কথা জানান। তিনি বলেন, মহাজোটের সঙ্গে আলোচনা করে এবং প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিবো আমরা বিরোধী দলে যাব নাকি মহাজোটেই থাকবো। তবে সংবিধান অনুযায়ী জাপার বিরোধী দল হতে কোনো সমস্যা নেই।
রাঙ্গা বলেন, আমরা নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট নই। আমাদের যা পাওয়ার কথা ছিলো তা পাইনি। আমাদের মহাজোট থেকে প্রথমে ২৯টি আসন দেয়া হয়েছিলো, সেখান থেকে ২৪টি করা হয়েছে। এখানে আমরা ২২টিতে জয়ী হয়েছি। রাঙ্গা আরও বলেন, নির্বাচনে আমাদের উপর অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। অনেক জায়গায় এজেন্টও থাকতে দেয়া হয়নি। তবুও বলবো, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। রাজনীতিতে যে আমাদের ভুল-ত্রুটি হয়নি তা বলার কোনো সুযোগ নেই। এখন আমাদের মহিলা এমপি হিসেবে বঞ্চিতদের জন্য কিছু করা যায় কি না সে চেষ্টা করবো।
জাপা মহাসচিব বলেন, আমাদের চেয়ারম্যানকে ভুল বোঝা এবং তাকে ভুল বোঝানো নেতা-কর্মীদের বিচার করা উচিত। তাহলে আগামী দিনে দল টিকে থাকবে। আমাদেরকে গণতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণভাবে রাজনীতির মাঠে থাকতে হবে। রাষ্ট্রে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করা যাবে না।
নির্বাচনের প্রসঙ্গে জাপা মহাসচিব বলেন, বিএনপি’র মতো আমাদের উপর মামলা-হামলা না হলেও জাপার অনেক নেতা-কর্মী নিগৃহীত হয়েছে। অনেক জায়গাতে তারা (বিএনপি কর্মীরা) এত বেশি নিগৃহীত হয়েছে, এত বেশি মামলা, তাদের উপর হয়েছে, সে পরিমাণ আমাদের উপর হয় নাই। সুতরাং আমরা বিরোধিতা করবো, গণতান্ত্রিকভাবে শালীনতার ভেতরে বিরোধিতা করতে চাই। আমরা লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় নামা, গাড়ি ঘোড়া ভাঙচুর করা, দোকানপাট লুট করা এটা আমরা করতে চাই না।
অনুষ্ঠানে জাপার উন্মুক্ত আসনের কয়েকজন প্রার্থী তাদের উপর হামলা, নির্যাতন ও লাঞ্ছিত হওয়ার বিবরণ তুলে ধরেন। এ সময় জাপা মহাসিচব তাদের খবরাখবর নেয়ার চেষ্টা করার আশ্বাস দেন।
জাপার দপ্তর সম্পাদক সুলতান আহমেদের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদা এম রশীদ চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য এসএম ফয়সল চিশতি, ভাইস চেয়ারম্যান রওশন আরা মান্নান, আলমগীর সিকদার লোটন, বাহাউদ্দিন বাবুল, নুরুল ইসলাম নুরু, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, জহিরুল ইসলাম রুবেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুল আহসান শাহজাদা প্রমুখ।