জাতীয় ঐক্যের আহ্বান খালেদা জিয়ার

রাজনীতি

Khaleda-zia-02_70407’৭১-এর ‘চক্রান্ত’ আজও চলছে দাবি করে ‘দেশ রক্ষায়’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান হয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে বিএনপি প্রধান বলেন, ‘প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং গণতন্ত্রকে বিপদমুক্ত করতে স্বাধীনতাযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান হয়ে আমাদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। মহান বিজয় দিবসে আমি দেশবাসী সকলের প্রতি সেই আহ্বান জানাই।’

খালেদা জিয়া প্রবাসীসহ বাংলাদেশের সবাইকে বিজয় দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। একইসঙ্গে তাদের অব্যাহত সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগী বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা স্বাধীন স্বদেশ পেয়েছি, আমি সেই সব বীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করি। স্বাধীনতার জন্য যেসব মা-বোন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন-আমি জানাই তাদের সশ্রদ্ধ সালাম।’

খালেদা জিয়া বলেন, ‘১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডাকে শুরু হওয়া স্বাধীনতাযুদ্ধ ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে বিজয়ী হয় দেশের অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তাই ১৬ ডিসেম্বর আমদের গর্বিত এবং মহিমান্বিত বিজয় দিবস। এদেশের দামাল ছেলেরা হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার সূর্য।’

মহান এই দিনে সেসব অকুতোভয় বীর সেনাদের সশ্রদ্ধ অভিবাদন জানান বিএনপি প্রধান।

শোষণ-বঞ্চনামুক্ত একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় নিয়েই ১৯৭১-এ এদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল উল্লেখ করে প্রাক্তন এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে আমাদের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত হয়েছে, জনগণের মৌলিক ও মানবিক অধিকার খর্ব হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই এদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষ লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে গণতন্ত্র ও মৌলিক অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে।’

১৯৭১-এ দেশ শত্রুমুক্ত হলেও চক্রান্তকারীদের চক্রান্ত আজও বিদ্যমান দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আধিপত্যবাদী শক্তি আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে গ্রাস করে একটি পদানত জাতিতে পরিণত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। ওই অপশক্তির এদেশীয় দোসররা নানাবিধ চক্রান্তজাল রচনা করে আমাদের বহু ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে বিপন্ন করে চলেছে। সেই জন্য ৫ জানুয়ারির প্রহসনের একতরফা নির্বাচন করে জনমতকে তাচ্ছিল্য করা হয়েছে।’

এদেশে এখন মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নেই মন্তব্য করে খালেদা জিয়া আরো বলেন, ‘ক্ষমতা জবরদখলকারীরা জনগণের ওপর নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করছে। বর্তমান পরিস্থিতি যেন ভয়ংকর নৈরাজ্যময়। এই অশুভ শক্তির নীলনকশা বাস্তবায়নে রক্তপাতের ওপরই নির্ভর করা হচ্ছে।’

স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে মহান বিজয় দিবসে দেশবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান খালেদা জিয়া।

অপর এক বাণীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

১৬ ডিসেম্বরকে জাতীয় জীবনে এক ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দিন উল্লেখ করে বিএনপির মির্জা আলমগীর বলেন, ‘দীর্ঘ পরাধীনতার শৃৃঙ্খল ছিন্ন করে ১৯৭১ সালের এদিনে আমরা প্রিয় মাতৃভূমিকে শত্রুমুক্ত করতে সক্ষম হই। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে অর্জন করি স্বাধীনতা।’

স্বাধীনতাযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে আত্মদানকারী বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মির্জা আলমগীর আরো বলেন, ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা আমাদের শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ অর্জন। গণতন্ত্র এবং অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়েই আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম। সে লক্ষ্য পূরণে আমরা আজও কাজ করে যাচ্ছি। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হব বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

বিজয়ের এ দিনে দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *