ঢাকা: মহাজোটের বড় শরিক এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে আওয়ামী লীগের আসন সমঝোতা চূড়ান্ত হয়নি। এ জন্য আওয়ামী লীগ ও জাপা তাদের প্রার্থী তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। ফলে নৌকা ও লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে কোন আসনে কারা এককভাবে ভোট করবেন, তা গতকাল পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি।
আজ রোববার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। আজকের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে কে কোন প্রতীকে ভোট করবেন। অর্থাৎ কে দলের প্রার্থী আর কে জোটের প্রার্থী, সেই তালিকা নির্বাচন কমিশনে দিতে হবে।
আওয়ামী লীগ গত শুক্রবারই ১৪-দলীয় জোটের শরিকদের ১৩টি আসনে ছাড় দিয়ে সমঝোতা করেছে। বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টকে তিনটি আসনে ছাড় দিয়েছে। তারা সবাই নৌকা প্রতীকে ভোট করবে। শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, জাপাকে ৪০ থেকে ৪২টি আসন দেওয়া হতে পারে।
তবে গতকাল দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এইচ এম এরশাদের জাপাকে ৩০ থেকে ৩২টি আসন ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। এর বাইরে ৮ থেকে ১০টি আসন উন্মুক্ত থাকতে পারে। এসব আসনে আওয়ামী লীগ, জাপা ও অন্য শরিকেরও প্রার্থী থাকবে। এতে জাপা খুশি নয়। শনিবার রাত আটটায় জাপার চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তা স্থগিত করা হয়।
এ ছাড়া যুক্তফ্রন্টও তিন আসনে সন্তুষ্ট নয়। শুক্রবার রাতে যুক্তফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক গোলাম সারোয়ার এক বিবৃতিতে এ অসন্তুষ্টির কথা
জানান। যুক্তফ্রন্ট আরও চারটি আসন বাড়তি চাইছে বলে জানা গেছে।
বিদ্রোহীদের নিয়ে আ. লীগে চিন্তা
মহাজোটের শরিকদের আসন নিয়ে জটিলতার মধ্যে আওয়ামী লীগের আরেক গলার কাঁটা দলের বিদ্রোহী প্রার্থী। দলের মনোনয়ন না পেয়ে অন্তত ৮০ জন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়ার পরও অর্ধশতাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী টিকে আছেন। নিজ দলের যাঁরা বিভিন্ন আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের প্রতি চিঠি দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে বলেছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনপির বিরুদ্ধে মনোনয়ন-বাণিজ্যের অভিযোগ
এদিকে গতকাল আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক অভিযোগ করেন, ‘বিএনপির মনোনয়ন-বাণিজ্য বেসামাল পর্যায়ে চলে গেছে। ঢাকা বা বাংলাদেশে নয়, লন্ডনে গিয়ে পৌঁছেছে এ অবস্থা। মাত্র টেলিভিশনে দেখলাম, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ চলছে।’
নিজ দলের বিদ্রোহীদের প্রসঙ্গে নানক বলেন, বিদ্রোহী ২৪ জন ছিলেন। ৬-৭ জন প্রত্যাহার করেছেন। যাঁরা এখনো প্রত্যাহার করেননি, তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে, প্রত্যাহার করবেন।