ঢাকা: স্ত্রী ও প্রবাসী শ্যালিকার টাকায় নির্বাচন করতে চান নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। রাজধানীর অভিজাত গুলশান এলাকায় বসবাস করলেও মান্না এবং তাঁর স্ত্রী মেহের নিগারের কোনো গাড়ি নেই। মান্নার চেয়ে তাঁর স্ত্রী বেশি সম্পদশালী।
মান্নার অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৭ লাখ ৪২ হাজার ৪৯২ টাকা। তাঁর স্ত্রী মেহের নিগারের অস্থাবর সম্পদ ৪০ লাখ ৯৭ হাজার ৭৩১ টাকা। মান্নার স্থাবর সম্পদ বলতে শুধু ৩২ লাখ ১৫ হাজার টাকা মূল্যের একটি বাড়ি। তাঁর স্ত্রীর রয়েছে রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় ৪২ অযুতাংশের জায়গাসহ ভবন এবং সুনামগঞ্জের সদরপুর ও ষোলঘর মৌজায় ৪৯ শতাংশ জমি। ১০ বছরে মান্নার দায়দেনা ছিল মাত্র ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ১০ বছরে দায়দেনা ৬৩৬ গুণ বেড়ে ৫৩ কোটি ৪৫ লাখ ৪৮ হাজার ২৪৬ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
২০০৮ ও ২০১৮ সালে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করতে চাইলেও মনোনয়ন পাননি। এই আসন থেকে তিনবার নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জনতা মুক্তি পার্টির হয়ে কাস্তে মার্কায় আর ’৯৬ ও ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
২০০৮ সালের হলফনামায় মান্না পেশা উল্লেখ করেছিলেন পোশাক কারখানার ব্যবসা। আয়ের উৎস ছিল ব্যবসা। এবারের হলফনামায় পেশা ব্যবসা, রাজনীতি, লেখক ও কলামিস্ট উল্লেখ করেছেন। এবারও তাঁর আয়ের উৎস ব্যবসা।
এবার অস্থাবর সম্পদ বিবরণীতে ২৭ লাখ ৪২ হাজার ৪৯২ টাকা থাকার কথা উল্লেখ করলেও ব্যাংকে মাত্র ১০ হাজার ৫৭৭ টাকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া নগদ ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৯১৫ টাকা, শেয়ারবাজার ও বন্ড বাবদ ২০ লাখ, ৫ তোলা স্বর্ণালংকার বাবদ ৩৫ হাজার এবং ১ হাজার ৬১২ বর্গফুটের একটি বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। ২০০৮ সালের হলফনামায়ও এই বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট ছিল।
১০ বছরে ঋণ বেড়েছে মান্নার। ২০০৮ সালের হলফনামায় তিনি ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা ঋণের কথা উল্লেখ করেছিলেন। গত ১০ বছরে ঋণ বেড়ে অর্ধশত কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এবারের হলফনামায় ঋণ উল্লেখ করা হয়েছে ৫৩ কোটি ৪৫ লাখ ৪৮ হাজার ২৪৬ টাকা।
এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দায় তো বাড়বেই। পাঁচ বছর ধরে সরকারের অব্যাহত চাপের মধ্যে টিকে আছি, এটাই তো অনেক বড় ব্যাপার।’
২০০৮ সালের নির্বাচন পর্যন্ত মাহমুদুর রহমানের নামে কোনো ফৌজদারি বা অন্য কোনো মামলা ছিল না। এবারের হলফনামায় তিনটি মামলার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। দুটি মামলা হয়েছে সিএমএম আদালতে। এগুলো তদন্তাধীন। অন্য মামলাটি বিশেষ সামরিক আদালতে। এ মামলা থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন।