ঢাকা: রাজধানীর আশকোনায় তাবলীগ জামায়াতের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আজ সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা বিমানবন্দর এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে ধাওয়া-পল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের তীব্রতা বাড়তে থাকে। একপক্ষ অপরপক্ষকে ঠেকাতে বিমানবন্দর সড়কের উভয়পাশে অবস্থান নেয়ায় ওই রাস্তার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের উত্তরা, হাউজ বিল্ডিং, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত এলাকা তীব্র যানজট দেখা গেছে। উপায় না পেয়ে মানুষ পায়ে হেঁটে তাদের গন্তব্যে যাচ্ছেন। জানা গেছে, তাবলীগের প্রধান নেতা মাওলানা সা’দ সমর্থক ও তার বিরোধী পক্ষ তৃণমূল তাবলীগের মধ্যে এই সংঘর্ষ হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার প্রবীর কুমার দাশ জানান, আজ ভোর থেকেই আশকোনা এলাকায় মারমুখী অবস্থান নেয় তাবলিগ জামায়াতের দুই গ্রুপ।
উত্তরার আবদুল্লাহ পুরে অবস্থান নিয়েছে আরেক পক্ষ। সংঘর্ষের পর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় সড়ক স্থবির হয়ে পড়েছে। তারা সড়কে অবস্থান নেয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, শুনেছি টঙ্গিতে তাদের জোড় অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। কিন্তু এখানে এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে ভোর বেলায় ঠেকাতে গিয়েই ঘটনার সূত্রপাত হয়।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে কীভাবে সড়কে যান চলাচল চালু রাখা যায় সে চেষ্টা চলছে। আমাদের অফিসাররা কাজ করছেন। ডাইভারসন করে রাস্তার একপাশে অন্তত: যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ডিএমপির উত্তরা জোনের ট্রাফিকের সহকারী কমিশনার (এসি) জুলফিকার জুয়েল বলেন, রাজধানীর অদূরে টঙ্গিতে জোর অনুষ্ঠিত হওয়াকে কেন্দ্র করে ফের বিবাদে জড়িয়েছে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপ। এক গ্রুপ অপর গ্রুপকে ঠেকাতে শনিবার ভোর থেকে উত্তরার বিমানবন্দর সড়কের উভয় পাশে অবস্থান নিয়েছে। আমাদের ফোর্সরা কাজ করছেন। তাবলিগ জামাতের উভয় পক্ষের মুরুব্বিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিকের চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, তাবলিগের বর্তমান আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বাংলাদেশে তাবলিগ জামায়াতের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু। গত বিশ্ব ইজতেমার সময়ও এ নিয়ে তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছিল। এরপর গত এপ্রিল মাসে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল।
সাদ সমর্থক ও বিরোধী এই দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব ইজতেমা স্থগিত করা হয়েছে, এমন খবর গণমাধ্যমে এসেছিল। গত ১৫ই নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় তাবলীগ জামায়াতের বিবদমান দুই পক্ষ, পুলিশের আইজি, ধর্ম সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছিল।