ঢাকা:একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়নি এখনো। দুদিন ধরে মনোনয়নের চিঠি দিলেও ৩০০ আসনের প্রার্থী কে হবে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে আরো বেশ কয়েক দিন।
প্রার্থীর অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দের চিঠি দেওয়ার মাধ্যমে প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে দলটি। তা দীর্ঘায়িত হতে পারে ৯-১০ দিন।
দলীয় সূত্র বলছে, ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। তার জন্য সময় যাচ্ছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করার পূর্বে বিএনপি নিজ দলীয় প্রার্থীর নাম গোপন করার কৌশল নিয়েছে।
এরই মধ্যে প্রায় ৮০০ জনকে মনোনয়ন চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সবগুলো মনোনয়নপত্রেই স্বাক্ষর করেছেন বিএনপি মহাসচিব নিজে। বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে এই গুরুভার পড়েছে তার উপরই।
তিনি বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত মনোনয়ন দিয়েছি প্রায় ৮০০ এর মতো। ২০-দলীয় জোটের শরিকদেরও দেওয়া হয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট নিজ নিজ দল থেকে মনোনয়ন দিচ্ছে। পরে যখন বাছাই হয়ে যাবে, তখন ঠিক করা হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
শরিকদের সঙ্গে সর্বমোট আসন বণ্টন কত হবে? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ৬০ এর বেশি হবে না মনে হয়।
২০-দলীয় জোটের শরিকদের কত আসন ছাড়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সঠিক ফিগার বলতে পারব না। সম্ভবত অ্যারাউন্ড ফিফটিন।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের কত আসন ছাড়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন তারা তাদের দল থেকে মনোনয়ন দিচ্ছে। পরে এটা আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
২০-দলীয় জোটের মধ্যে বিজেপি, খেলাফত মজলিস, এলডিপি, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, এনপিপি, লেবার পার্টি ও সাম্যবাদী দলকে আসন ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। তবে এর সঠিক সংখ্যা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল।
তবে বিএনপির একটি সূত্র থেকে জানা যায়, ২০-দলীয় জোটের শরিকদের মধ্য থেকে ভোলা-১ আসনে বিজেপির আন্দালিভ রহমান পার্থ, নড়াইল-২ আসনে এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, চট্টগ্রাম-৫ আসনে কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, চট্টগ্রাম-১৪ আসনে এলডিপির অলি আহমদ, কুমিল্লা-৬ আসনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সৈয়দ গোলাম মহিউদ্দিন, কুমিল্লা-৭ আসনে এলডিপির রেদওয়ান আহমেদ, লক্ষ্মীপুর-১ আসনে এলডিপির সাহাদাত হোসেন সেলিম, সুনামগঞ্জ-৩ জমিয়তে উলামায়ে ইসলামীর শাহীনুর পাশা, পিরোজপুর-২ আসনে লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, পিরোজপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, গাইবান্ধা-৩ টি আই ফজলে রাব্বী, চাঁদপুর-৩ আসনে এস এম এম আলম, কুষ্টিয়া-২ আসনে আহসান হাবিব লিংকন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে সেলিম মাস্টার ধানের শীষের মনোনয়ন চিঠি নিয়েছেন।
বিএনপি এখনো প্রার্থিতা নিশ্চিত না করার কারণ সম্পর্কে জানা যায়, মূলত প্রার্থীদের সরকারি হয়রানি থেকে সুরক্ষার কৌশল হিসেব বিএনপি দেরিতে প্রার্থীদের চূড়ান্ত করতে চায়।
দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিএনপির মনোনয়ন দেয়ার বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়নি, হলে জানানো হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর প্রতীক বরাদ্দের চিঠি পাঠিয়ে তারপর তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রার্থীদের নাম প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত সময় আছে।
এদিকে বিএনপির চেয়ারম্যান বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়।
নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৮ নভেম্বর তথা আগামীকাল। প্রার্থিতা যাচাই-বাছাই ২ ডিসেম্বর এবং প্রত্যাহার করার শেষ সময় ৯ ডিসেম্বর।