সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ-এই চারটি জেলা নিয়ে গঠিত সিলেট বিভাগ। এ বিভাগে সংসদীয় আসন রয়েছে ১৯টি।
সর্বোচ্চ ছয়টি আসন সিলেট জেলায়; সুনামগঞ্জে পাঁচটি, আর বাকি দুই জেলায় চারটি করে আসন রয়েছে।
এসব আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রায় দুইশ’ নেতা-নেত্রী একাদশ জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের প্রত্যাশায় রয়েছেন। এসব নেতা-নেত্রী ইতোমধ্যেই দলের কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের কাছে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। বর্তমানে তারা আছেন দলীয় সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায়। এখন সিলেটের মনোনয়নপ্রত্যাশী এসব নেতারা দলীয় মনোনয়ন পাওয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে এখন মহাটেনশনে রয়েছেন।
একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর সাথে কথা বলে জানা যায়, মনোনয়ন জুটবে কিনা, তা নিয়ে তাদের মধ্যে টেনশন কাজ করছে। দলীয় মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রাথমিক সিদ্ধান্তও নিয়ে রেখেছেন কয়েকজন নেতা। তবে পরিস্থিতি বুঝে ওই পথে (স্বতন্ত্র) পা বাড়াবেন তারা। দলের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে যদি মনোনয়নবঞ্চিতদের কোনো আশ্বাস প্রদান করা হয়, তবে তারা দলের প্রার্থীর পক্ষেই মাঠে কাজ করবেন।
সিলেট বিভাগের ১৯টি আসনের প্রতিটিতেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। কোনো কোনো আসনে তিন-চারজন করেও মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছে। যার ফলে কার ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন জুটে, এ নিয়ে এসব মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে টেনশন কাজ করছে।
মনোনয়নপ্রত্যাশী এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মনোনয়ন পাবো, এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। কারণ, এলাকায় আমার জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা আছে। নেতাকর্মীদের সাথে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। তবু দল চূড়ান্তভাবে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা নিয়ে টেনশন কাজ করছে। ’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী দু-তিনদিনের মধ্যেই দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করবে দলগুলো। আওয়ামী লীগ মহাজোটের ব্যানারে এবং বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২৩ দলীয় জোটের ব্যানারে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি ইতোমধ্যেই তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। এখন শেষমুহুর্তে জোটের সাথে তাদের দরকষাকষি চলছে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুসারে, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে ৩০ ডিসেম্বর। এর আগে ২৮ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এর মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে।
এদিকে, শুধু মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারাই নন, সিলেটের সাধারণ মানুষ সবার মধ্যেও এখন কোন আসনে কে প্রার্থী হচ্ছেন, তা নিয়ে আগ্রহ বিরাজ করছে। বিভিন্ন আসনে বর্তমানে যারা সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন, তারা আবারও মনোনয়ন পাচ্ছেন কিনা, কারা বাদ পড়ছেন, কোন আসনে প্রার্থী ঘোষণায় চমক থাকছে-প্রভৃতি নানা প্রশ্ন এখন মানুষের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণার মাঠে জোরেশোরে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আজমল বক্ত চৌধুরী সাদেক।