জমি অধিগ্রহণে বিভিন্ন জটিলতার কারণেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নে সময় ক্ষেপণ বা ধীর গতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
রোববার বেলা ১২টায় রাজধানীর শেরে বাংল নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা গত সপ্তাহে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সঙ্গে এডিপি বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা করেছি। সেখানে আমরা এডিপি বাস্তবাস্তনে বাধাগুলো কী কী, তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করে যেটা দেখেছি, অর্থ বরাদ্দ নয়, ধীর গতির মূল কারণ প্রকল্পের জায়গা। প্রকল্পের কাজ শুরু হলে সেখানে কবরস্থান নয়তাবো মাজার থাকে বলে দাবি করা হয়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যাতে প্রকল্পগুলো সময় মতো বাস্তবায়ন না করতে পারি, এ জন্য বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করা হয়। এ কারণেই প্রকল্প শুরু করার আগে জায়গা-জমির কথা মাথায় রেখে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য একনেকে নিয়ে আসবেন।’
জমি–জায়গার সমস্যা ছাড়াও মন্ত্রী আরো ১০টি সমস্যার কথার জানান। সেগুলো হলো- ওয়ার্ক প্ল্যান প্রণয়ন, নির্মাণ ক্ষেত্রে রেট সিডিউলের বারবার পরিবর্তন, স্থাপনা সম্পর্কিত, পরামর্শক/ফার্ম নিয়োগ, প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ, জনবল নিয়োগ, প্রকল্পের ডিপিপি/টিপিপির সঠিক প্রণয়ন, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও মনিটরিং, চাহিদার তুলনায় এডিপিতে অপর্যাপ্ত বরাদ্দ, বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পে অর্থপ্রাপ্তি।
মন্ত্রী বলেন, ‘দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নে যে সুপারিশগুলো করা হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। একই সঙ্গে আগামীতে ভিন্ন আঙ্গিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাব।’
উদারহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে প্রকল্প চলাকালীন প্রকল্প পরিচালককে পরিবর্তন করা হয়। এটি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়াও। আগামীতে আর প্রকল্প চলাকালে কাউকে পরিবর্তন করা হবে না্। তবে প্রধানমন্ত্রী চাইলে পরিবর্তন করা যাবে।’
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গত ৫ মাসে ২১ শতাংশ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘গত ৫ মাসে (নভেম্বর পর্যন্ত) বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থা ১৫ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা ব্যয় করতে পেরেছে। গত অর্থবছরের এ সময় (নভেম্বর ২০১৩) ব্যয় করা হয়েছিল ১৩ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা।’
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ মাসে শূন্য শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে ১৫টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা। এর মধ্যে সাতটি মন্ত্রণালয় শূন্য শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে সেতু বিভাগ রয়েছে। এ ছাড়া ১৫ থেকে ২০ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে ১৩ মন্ত্রণালায় ও বিভাগ এবং ২০ শতাংশের বেশি্ এডিপি বাস্তবায়ন করেছে ২৪টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ।