হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাট সংবাদদাতাঃ লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে পণ্য আনা-নেয়ার সুবিধার্থে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে চার লেনের স্বর্ণামতি সেতু।
আদিতমারী উপজেলার স্বর্ণামতি নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি দিয়ে এরই মধ্যে যান চলাচল শুরু হলেও আটকে গেছে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় এ জটিলতা দেখা দিয়েছে।
পরবর্তী সরকার গঠনের আগে স্বর্ণামতি সেতুর উদ্বোধন সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
লালমনিরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬১ সালে লালমনিরহাট-বুড়িমারী বোর্ড সড়কে স্বর্ণামতি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ করে তৎকালীন সরকার।
১৯৮৮ সালে বুড়িমারী স্থলবন্দর চালু হলে সড়কটির গুরুত্ব বেড়ে যায়।
এক পর্যায়ে আগের নির্মিত সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লে স্বর্ণামতি নদীর ওপর একটি বেইলি ব্রিজ স্থাপন করা হয়। সময়ের পরিক্রমায় বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেইলি ব্রিজটিও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
এছাড়া ঢাকা-রংপুর-বুড়িমারী স্থলবন্দর সড়ক দক্ষিণ এশিয়া উপ-আঞ্চলিক অর্থনৈতিক (সাসেক) রোড করিডরের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় স্বর্ণামতির ওপর চার লেনের সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়।
২০১৫ সালের ১ জুলাই এ সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়ে শেষ হয় গত ৩০ জুন। ৯৩ দশমিক ৬৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা।
নির্মাণ শেষে লালমনিরহাট-বুড়িমারী সড়কে যান চলাচলের চাপ বিবেচনায় নিয়ে সেতুটি উদ্বোধনের আগেই যান চলাচলে উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত সেতুটি উদ্বোধনের কোনো নির্দেশনা আসেনি। কেন উদ্বোধন হচ্ছে না, তা সওজ ভালো বলতে পারবে। আমার কোনো ধারণা নেই।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নূরায়েন বলেন, আদিতমারীতে স্বর্ণামতি নদীর ওপর ‘চার লেন’ সেতুটি দুটি প্যাকেজে নির্মাণ করা হয়েছে।
সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে এরই মধ্যে সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে।
বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও রফতানিকারক ব্যবসায়ী শামীম হোসেন বলেন, আগে প্রায়ই স্বর্ণামতির বেইলি সেতুর পাটাতন সরে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেত।।
এতে আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী যানবাহন দুদিকে আটকে থাকত। ফলে আমাদের খরচ বেড়ে যেত।
এ পথ দিয়ে পচনশীল পণ্য পাঠানো যেত না। এখন নতুন সেতু নির্মাণ হওয়ায় পণ্য পরিবহন সহজ হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হচ্ছেন।
লালমনিরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান বলেন, লালমনিরহাট জেলার সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। সর্বশেষ স্বর্ণামতি নদীর ওপরও চার লেন সেতু নির্মাণ হয়েছে।
এসব উন্নয়নের ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি এসেছে। এখন একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব হলে লালমনিরহাটের দৃশ্যপট পাল্টে যাবে।