অতিথি পাখি নয়, মূল্যায়ন করা হোক তৃণমূল আর ত্যাগী নেতাদের

Slider রাজনীতি

তফসিল ঘোষণার পর পরই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র কেনার প্রথম দিনটি সবার নজর কেড়েছে। ২৩ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ৩০০ আসনে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী যে একাধিক তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

৩০০০০ টাকার মূল্যমানের মনোনয়নপত্র গতকাল পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ১৭০০। বাকী দিন গুলোতে এর পরিমাণ কি হতে পারে তা অনুমেয়। বিষয়টি সত্যিকারভাবে দলের জন্য প্রশংসনীয়। কিন্তু এর মাঝে নতুন মুখ ছিল অনেক বেশি। আরো লক্ষনীয় মনোনয়ন পত্রের মূল্যমানটা দেবার মত ক্ষমতাবান ব্যক্তি অনেক দেশে। কিন্তু এ দলটির কাছে জনগণের প্রত্যাশা এখন ভিন্ন মাত্রার। তারা চায় তাদের এমপি হবে সত্যিকারের তাদের একজন। যিনি বলবেন তাদের কথা। ধরাছোঁয়ার বাইরের ব্যক্তি দিয়ে ভোট আর নয়।

উন্নয়নের পথে হাঁটাছে আওয়ামী লীগ। তাই জনগণের আশাকে সামনে নিয়ে দলকে নির্বাচনে প্রার্থী দিতে হবে জনগণের চাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে। টানা ২ বার ক্ষমতায় থাকা দলটিতে এখন নানা মেরুকরণ হিসাব চলছে। সে সাথে তৃতীয়বারের মত ক্ষমতায় আশার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায় দলে অনুপ্রবেশ ঘটেছে ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি ও পেশার লোক। এদের অনেকে হয়তবা ঢাকা কেন্দ্রিক রাজনীতির বলয় সৃষ্টি করেছে। নৈকট্য লাভ করেছে কেন্দ্রীয় নেতাদের। আবার অনেকে কেন্দ্রের পাশাপাশি নিজ আসনে প্রচার প্রচারনা দিয়ে নিজেদের পরিচিত করা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিগত কিছুদিন যাবত। এসব সাময়িক কর্মকাণ্ড যে কেবল ভোটকেন্দ্রিক তা মানুষ বুঝে। ভোট আর এখন বিক্রি হয় না। জন সচেতনতা তার প্রমান।

এবারের নির্বাচনের হিসাবে এখন পর্যন্ত অন্যান্য দলের সাথে দর কষাকষিটা স্পষ্ট হয়নি। যার ফলে আসন বন্টন কি করে হয় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

তবে প্রতিনিয়ত নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখা যায় দলের তৃণমূলের নেতা সহ বঞ্চিত হয় ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে উঠা আসা ত্যাগী নেতারা। আর এ কারণে দলের একনিষ্ঠ নেতা কর্মীদের মধ্যে একধরনের হতাশা কাজ করে। যার ফলে হারিয়ে যায় ত্যাগী নেতারা। জনগণের মাঝে থাকে এক ধরনের ক্ষোভ।

বলা হচ্ছে একজন ভোটার প্রতি প্রার্থী ১০ টাকা ব্যয় করতে পারবে। কিন্তু খাতা কলমের এ হিসাব ভোটের মাঠে থাকবে না তা শতভাগ নিশ্চিত। শুধুমাত্র অর্থ আর কেন্দ্রীয় নেতাদের খুশি করে নির্বাচনে জয় লাভ করে জন বিচ্ছিন্ন এমপিদের অবস্থা কথা পত্র পত্রিকায় উঠে এসেছে বারবার। সুতরাং রাজধানী কেন্দ্রিক ব্যক্তি নয় মনোনয়ন দেয়া হোক জনগণের কাছের মানুষকে।

প্রধানমন্ত্রীর সুচিন্তার ফলাফল দেশের উন্নয়ন। দেশের চরম সংকটময় পরিস্থিতিকে তিনি নিজে একক সিদ্ধান্তে সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। তাই তার কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশী।

নির্বাচনের জোয়ারে দলে ভিড় করা অতিথি পাখিদের কাছে হার মেনে যায় দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতারা। তাই সামগ্রিক উন্নয়নের পাশাপাশি দলের আভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। দলীয় প্রার্থীদের হালখাত হিসাবটা মেলাতে হলে জানতে হবে। প্রার্থীদের সংসদীয় আসনে কার কি অবস্থান। যদিও যাচাই বাছাই অনেকটা সম্পন্ন হয়েছে বলে শোনা যায়।

দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ছাড়া আর তেমন কোন দল নেই বলা চলে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিপেক্ষের অনেকে মুখে ফেনা তুলছে নৌকার গান গেয়ে। আবার শহুরে জীবনে নিজেকে পরিচিত করেছে অথচ গ্রামের মানুষদের কাছে অচেনা তাদেরও সাধ এমপি হবার। নিজ আসনে গাড়ি হাঁকিয়ে বেড়েছে আসা যাওয়া। কিন্তু এমন ব্যক্তিদের কাছে সাধারণ জনগনের প্রত্যাশা থাকে না। কারণ তারা জানে এরা জন বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি। এমপি হতে চায় নিজের প্রয়োজনে।

তাই দেশের মানুষের প্রত্যাশা অতিথি পাখি আর নয়। এবার তাদের সব সময়ের পাশে থাকা নেতাই সংসদে গিয়ে বলবে তাদেরই কথা। উন্ননের সাথে সাথে সঠিক প্রার্থী প্রয়োজন আগামী দিনের জন্য সন্দেহতীত ভাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *