স্ট্রোক বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত বয়স্ক নারী–পুরুষকে শয্যাশায়ী করে ফেলে। শুধু বয়স্ক নয়, কখনো কখনো অপেক্ষাকৃত কম বয়সী ব্যক্তিরাও স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং কর্মক্ষমতা হারান।
মস্তিষ্কে রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলে বা কখনো রক্তনালি ফেটে গিয়ে রক্ত জমাট বেঁধে গেলে মস্তিষ্কের কোনো অংশের কোষে যে স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যায়, সেটাই স্ট্রোক। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বির আধিক্য, ধূমপান ইত্যাদি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। সময়মতো স্ট্রোকের লক্ষণগুলো বুঝতে পারলে ও দ্রুত চিকিৎসা নিলে ক্ষতিকর দিকগুলো অনেকটাই এড়ানো যায়। স্ট্রোকের উপসর্গ বুঝতে ‘ফাস্ট’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ইংরেজি বর্ণমালার চার অক্ষরের ফাস্ট মানে হলো:
এফ-(ফেস): মুখের একদিক বেঁকে যাওয়া বা ঝুলে যাওয়া।
এ (আর্ম): কোনো হাত ঝুলে পড়া বা হাত নাড়াতে না পারা বা হাতের শক্তি কম মনে হওয়া।
এস (স্পিচ): কথা জড়িয়ে যাওয়া বা কথা বলতে অপারগতা।
টি (টাইম): ওপরের উপসর্গগুলো টের পেলে দেরি না করে সময়মতো চিকিৎসকের সাহায্য নিন।
ফাস্ট–এর বাইরে আরও কিছু উপসর্গ স্ট্রোক বুঝতে সাহায্য করে। যেমন মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, মাথা হালকা বোধ হওয়া, হাঁটতে গিয়ে ভারসাম্যহীন মনে হওয়া, দৃষ্টিতে সমস্যা, ভুল কথা বলা বা চেতনা লুপ্ত হওয়া। কখনো বমিও হতে পারে। হঠাৎ রক্তচাপ অনেক বেশি বেড়ে যেতে পারে। স্ট্রোকের পর অনেকের খাবার গ্রহণে সমস্যা হয়, খাবার গিলতে গিয়ে গলায় আটকে যায় বা বিষম খান। খাবার বা পানি মুখের কাছ থেকে গড়িয়ে পড়তে পারে।
স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে মধ্যবয়স থেকেই সচেতনতা দরকার। নিয়মিত নিজের রক্তচাপ মাপুন। রক্তচাপ বেশি থাকলে তা নিয়ন্ত্রণ করুন। রক্তের শর্করা ও চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ধূমপান বর্জন করুন। বেশি করে তাজা শাকসবজি ও ফলমূল খান। ওজন ঠিক রাখুন। খাবার লবণ কমিয়ে দিন। স্ট্রোক আপনার কর্মমুখর জীবনকে হঠাৎ করেই স্থবির করে দিতে পারে। তাই এখনই সচেতন হোন।