নব্বইয়ের দশকে যে জনপ্রিয় টিভি সিরিজগুলো ছিল তাদের অন্যতম ‘আলিফ লায়লা’। এটি ছিল বাংলায় ডাবিংকৃত।
প্রচারিত হতো সে সময়ের একমাত্র টিভি চ্যানেল বিটিভিতে। সে সময়ের ডাবিং শিল্পীরা ছিলেন ভারতীয়। সংলাপে, উচ্চারণে তা সহজেই ধরে ফেলতেন এপার বাংলার মানুষ। কিন্তু সেই দশা বদলেছে এখন।
হালের ‘সুলতান সুলেমান’ থেকে সর্বশেষ ‘জান্নাত’ এর ডাবিং এখন দেশেই হচ্ছে। দেশের বাচিক শিল্পীরা নিজেদের সঙ্গে সঙ্গে বিকশিত করে যাচ্ছেন নতুন একটি ক্ষেত্র। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে এটিএন বাংলায় রবি থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় প্রচারিত হচ্ছে তুরস্কের আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত মেগা সিরিয়াল ‘জান্নাত’। অনেকেই মনে করছেন বাংলা ডাবিং নতুন একটি উচ্চতায় পৌঁছেছে এর মাধ্যমে। এই সিরিয়ালের প্রধান চরিত্র জান্নাত, পার্শ্ব চরিত্র মেলিসা, সেলিম, দাদীর মতো চরিত্রগুলোর ডাবিং খুবই যথাযথ হয়েছে বলে মনে করছেন দর্শক।
শব্দ আর চিত্র মিলিয়ে শিরদাঁড়া উচু করে দাঁড়ায় অডিও ভিজ্যুয়াল ইন্ডাস্ট্রি। এর যেকোনো একটি দুর্বল হলে পুরো প্রকল্পটি ব্যর্থ হয়। আর আজকের দর্শক বিশ্ব নাগরিক। তার হাতের রিমোট অনেক সক্রিয়। দৃশ্য বা শব্দের যেকোনো হেরফেরে এই আধুনিক দর্শক বিরক্ত হন। রিমোট টিপে অন্য চ্যানেলমুখি হন। তবে মেগা সিরিয়াল জান্নাতের বেলায় তেমনটি ঘটেনি বলে জানিয়েছেন এর দর্শকরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন্নেসা হলের ছাত্রী ইসরাত জাহান ‘জান্নাত’-এর নিয়মিত দর্শক। এখন পর্যন্ত একটি পর্বও বাদ যায়নি তার। তিনি বললেন, ‘জান্নাত সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে সিরিয়াল। এর পটভূমি আজকের সময়ের তুরস্ক। এর পাত্র-পাত্রীরা প্রায়ই ইংরেজি শব্দ বলে থাকেন। অনেকটা আমাদের মতোই। তাই জান্নাতের ডাবিং আমার ভালো লেগেছে। ’
ইসরাতের মতে, মত প্রকাশের জন্যই ভাষা। সে ভাষা দেশি না বিদেশি সেটি গুরুত্বপূর্ণ না। তাই সংলাপের ভেতর ইংরেজি শব্দের ব্যবহারে দোষ দেখেন না তিনি। সব মিলিয়ে জান্নাতের ডাবিং সন্তোষজনক মনে করেন তিনি।
জান্নাত সিরিয়ালের ডাবিং পর্বে তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন সুলতান সুলেমান খ্যাত দীপক সুমন। তিনি বলেন, ‘জান্নাতের কাজটি খুব গুছানো ছিল। আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। এখন ভালো লাগা মন্দ লাগা দর্শকের কাছে। ’
মাত্র ২০১৭ সালে মেগা সিরিয়াল ক্যাটাগরিতে আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে জান্নাত। এতো দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের দর্শকদের সামনে এটি হাজির করেছে ভিথ্রি কমিউনিকেশন লিমিটেড। বাংলা ডাবিংয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানটি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে।
জান্নাত সিরিয়ালের নির্বাহী প্রযোজক মুশফিকুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘প্রথম থেকেই জান্নাত ভালো সাড়া পেয়েছে। সামনের দিনে এর জনপ্রিয়তা আরও বাড়বে। আর বাংলা ডাবিং নিয়ে আমাদের শুরুতেই মনোযোগ ছিল। আর দর্শকরা তা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করায় আমরা কৃতজ্ঞ।