চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানে দিদার নামে এক বাস চালককে সাজা ও জেলে দেওয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি ও হাটহাজারী-ফটিকছড়ি মহাসড়ক আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে অবরোধ করে রেখেছে বাস চালক ও শ্রমিকরা।
কোন রকম ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ এমন অবরোধে সড়কে বিভিন্নস্থানে দেখা দিয়েছে গন্তব্যমুখী যাত্রীদের দুর্ভোগ। এতে সমচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন চাকরিজীবী ও শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানান, শত শত বাস চালক ও শ্রমিক মহাসড়কের নাজিরহাট ঝংকার মোড়, নতুন রাস্তার মাথা, হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড ও অক্সিজেন মোড়ে অবস্থান নিয়ে সবরকম যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে পণ্যবাহী শত শত ট্রাক আটকা পড়েছে। সড়কের বিভিন্নস্থানে হাজার হাজার সিনজি অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, টেম্পুবাহী যাত্রী আটকা পড়েছে।
রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি পার্বত্য এলাকায় নিয়োজিত সেনাবাহিনীর গাড়ি পর্যন্ত আটকে দিয়েছে বাস চালক ও শ্রমিকরা। এ নিয়ে আপত্তি করায় তারা সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপরও চড়াও হতে দেখা গেছে।
সেনাবাহী গাড়িও ধাক্কা দিয়ে সড়ক থেকে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে বাস চালক ও শ্রমিকরা।
ট্র্রাফিক বিভাগ চট্টগ্রাম উত্তর হাটহাজারী সার্কেলের ট্রাফিক ইনচার্জ (টিএ) মোস্তাফিজ জানান, সড়কে কোনরকম যানবাহন যাতে চলাচল করতে না পারে সেজন্য বাস চালক ও শ্রমিকরা বড় বাসগুলোকে আড়াআড়িভাবে রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। জেলে দেওয়া বাস চালকের মুক্তির দাবিতে সড়কের বিভিন্নস্থানে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করে চলেছে।
হঠাৎ সড়ক অবরোধের কারণে চট্টগ্রাম শহরগামী ছাত্র, ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার মানুষের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
রাঙামাটি থেকে প্রাইভেট কার নিয়ে আসা চট্টগ্রাম শহরগামী হামিদুর রহমান আটকা পড়েন হাটহাজারী বাস স্টেশন মোড়ে। তিনি বলেন, অবরোধের কথা কিছুই শুনিনি, এসে দেখি যানবাহন চলতে দিচ্ছে না শ্রমিকরা। এখন কি করে শহরে যাব বুঝতে পারছি না।
সড়ক অবরোধের ব্যাপারে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বাস-ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ স¤পাদক সামশুল আলম বলেন, বুধবার রাতে দিদার নামে বাসের (গাড়ি নং- চট্টগ্রাম-ব ০৫-০০১৩) এক ড্রাইভারকে হাটহাজারী ১নং রাস্তার মাথায় (চবি গেইট) সিগনাল দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
কিন্তু চালক খেয়াল না করে গাড়ি না থামালে তাকে ধাওয়া দিয়ে হাটহাজারী থানার সামনে থেকে ধরে বেধম পিটুনির পাশাপাশি দ্রুত থানায় প্রেরণ করে। যার কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি চালক দিদারের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সড়ক অবরোধ চালিয়ে যাব।
হাটহাজারী সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, ট্রাফিক আইন না মানায় বাস চালক দিদারকে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। এ জন্য বাস চালক ও শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছে। অবরোধ তুলে নিতে হাটাহাজারী থানার পুলিশ কাজ করছে।
তিনি বলেন, সড়ক অবরোধ তুলে নিতে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বাস চালক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতাদের সাথে কথা চলছে। আশা করি সমস্যার সমাধান হবে। তবে বাস চালক ও শ্রমিকরা এখনো সড়কে অবস্থান করছেন বলে জানান তিনি।