উচ্ছল তিস্তা এখন ধু-ধু বালুচর

Slider কৃষি, পরিবেশ ও প্রকৃতি


হাসানুজ্জামান, লালমনিরহাট: বালুরে ভরে গেছে সেই উচ্ছল তিস্তা নদী।নদীর বুকে ভরে গেছে বালু দিয়ে।লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে কৃষি জমিতে যে সেচ দেয়া হয় তা এখন প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ঐতিহাসিক এ তিস্তা নদী। যা লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিশে যায়।

এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার। ভারতের গজল ডোবায় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভারত সরকার একতরফাভাবে তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় বর্ষা শেষ হতে না হতেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরা খালে পরিনত হয়েছে। লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী জেলার ১২৫ কিলোমিটার তিস্তার অববাহিকায় জীবনযাত্রা, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দেশের অন্যতম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ এখন বিলীন হওয়ার পথে। তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত তিস্তা রেল সেতু, তিস্তা সড়ক সেতু ওনির্মাণাধীন দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু যেন প্রহসনমূলকভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে ধু-ধু বালু চরের তিস্তার ওপর। ব্রিজ থাকলেও পায়ে হেঁটেই পার হচ্ছে অনেকেই। ঢেউহীন তিস্তায় রয়েছে শুধু বালু কণা।

তিস্তা পাড়ের জেলে আব্বাস উদ্দীন জানান, বর্ষার সময় মাছ ধরে মোটামুটি ভালোই ছিলেন পরিবার পরিজন নিয়ে। বর্তমানে নদীতে পানি নেই, মাছও নেই; তাই কষ্টে চলছে দিনকাল। তারও জোর দাবি, যে করেই হোক তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা চাই।

তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রয়োজনের তুলনায় তিস্তার পানি প্রবাহ অনেক কম। যে পরিমাণ পানি আছে তা দিয়ে সেচ প্রকল্পের আওতায় নীলফামারী জেলায় সেচ দেয়া কষ্টকর হবে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *