একটি বৃহত্তর কার্যকর ঐক্য নিয়ে আরো আলাপ-আলোচনার পাশাপাশি দফা ও লক্ষ্য স্থির করতে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ড. কামাল হোসেনের বাসায় বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্যপ্রক্রিয়ার নেতারা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। তবে এ বৈঠকে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে আপাতত কোনো আলোচনা হচ্ছে না, এমনকি আগেও হয়নি। প্রকৃতপক্ষে আন্দোলনকে একটি চূড়ান্ত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার আগ মুহূর্তে এসব বিষয় নিয়ে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্যপ্রক্রিয়ার কারো মধ্যেই আপাতত তেমন আগ্রহ নেই, এসব নিয়ে সবাই চায় কম বিতর্কে জড়াতে।
জানা গেছে, আজকের বৈঠকে আলোচনার এজেন্ডা চূড়ান্ত করতে গত মঙ্গলবার ও গতকাল কয়েক দফা বৈঠক হয়। আজকের বৈঠকে যেন অহেতুক কোনো বাগি¦তণ্ডা না হয় সে ব্যাপারে ঐক্যপ্রক্রিয়ার সম্পৃক্তরা এজেন্ডা চূড়ান্ত করেছেন গতকাল।
সূত্র জানায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশের পর একটি বৃহত্তর ঐক্য হয়ে গেছে শুধু এমন ধারণা নিয়ে কাজ করলেই কাক্সিক্ষত ফল আসবে না,সর্বস্তরের জনগণও এতে সম্পৃক্ত হবে না। তাই এসব বিষয় নিয়ে গত দু’দিন আন্দোলন এবং ভবিষ্যতে কাক্সিত সাফল্য নিয়ে আলোচনা হয়। ঐ সময় কার কী ধরনের ভূমিকা থাকবে এসব বিষয় নিয়ে কিভাবে আস্থার পরিবেশ তৈরি করা যায় তা সৃষ্টি করতেই এখন আলোচনা হচ্ছে। জানা গেছে, এক ধরনের গ্যারান্টি আদায়ের পালা চলছে। আর এ জন্য তাড়াহুড়া না করতে আস্থা তৈরিতে আগামী দিনগুলোতে আরো যুগপৎ কর্মসূচি বিশেষ করে রাজপথের পাশাপাশি সভা-সেমিনার আয়োজন নিয়ে আলাপ-আলোচনা প্রাধান্য পাচ্ছে। আর এসবের ফাঁকে বাকি অন্য বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা যাবে ধরে নিয়ে আজকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
তবে ঐক্যপ্রক্রিয়ার অপর একটি সূত্র জানায়, আজকের বৈঠকটি মূলত বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্যপ্রক্রিয়ার পক্ষ থেকে দেয়া এ পর্যন্ত সব ক’টি দফার একটি সংক্ষিপ্ত রূপ দিতে আলোচনা হবে। জানা গেছে এ পর্যন্ত সবার পক্ষ থেকে ডজন খানেক দফা ও লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। যা নিয়ে বিএনপি, যুক্তফ্রন্ট ও ঐক্যপ্রক্রিয়ার মধ্যে এখনও অনেক মতবিরোধ আছে। আর এগুলোকে আরো সংক্ষিপ্ত করে জনগণের কাছে তুলে ধরতে একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
এসব তথ্য দিয়ে নয়া দিগন্ত প্রতিবেদককে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন জানান, খসড়াটি চূড়ান্ত করেই আজ জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনকে কাছে দেয়া হবে। জানা গেছে, এটি চূড়ান্ত করতে গতকাল সকালে জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রবের বাসায় কয়েক দফা বৈঠকও হয়। এ ছাড়া এটি চূড়ান্ত করার আগে জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার নেতরাও নিজেদের মধ্যে গত বুধবার বৈঠকে বসেন।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ভাবনা
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোর কূটনীতিকেরা আবারো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। ৪ অক্টোবর সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কে ‘ইইউ-বাংলাদেশ ফোর্থ বিজনেস কাইমেট ডায়ালগে’ তারা এ আশা প্রকাশ করেন। এর জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আগামী নির্বাচনে পুরো প্রক্রিয়া কূটনৈতিকদের সামনে ব্যাখ্যা করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী পরে সাংবাদিকদের বলেন, তাদের বলেছি- এটা নির্বাচনের বছর, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। সব দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সংবিধান অনুসারে নির্বাচন হবে। মতাসীন দল রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে। সরকারের আয়তন হয়তো ছোট হতে পারে, এটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। সেই ম্যাসেজটি আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে দিয়েছি।
বাণিজ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সংলাপে ইইউর রাষ্ট্রদূত রেনিসি তেরিংক, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, সুইডেন, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, স্পেনসহ আটটি দেশের রাষ্ট্রদূত, জার্মানির কূটনীতিক এবং ইইউ বিজনেস সেক্টরের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।