ঢাকা: রাশিয়ার বিরুদ্ধে সাইবার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে বৃটেন। বিশ্বজুড়ে একের পর এক সাইবার হামলার মূল হোতা বলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘মেইন ইন্টেলিজেন্স ডিরেক্টরেট’কে (যা আগে জিআরইউ নামে পরিচিত ছিল) দায়ী করেছে বৃটেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি তাদের এমন কর্মকান্ডের উচিত জবাব দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মেইন ইন্টেলিজেন্স রেক্টরেট হলো রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা। তাদেরকে প্রকাশ্যে, আনুষ্ঠানিকভাবে দায়ী করেছে বৃটেন।
বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বুধবার রাতে বলেছেন, বৈষম্যমুলক ও অবৈধভাবে সাইবার হামলা চালাতে গোপনে কাজ করে যাচ্ছে ক্রেমলিন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল। রাশিয়ার গোয়েন্দা সের্গেই স্ক্রিপল ও তার মেয়ে ইউলিয়ার ওপর বিষপ্রয়োগের জন্যও রাশিয়ার ওই সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়ী করা হয়েছে। রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাটির আগের নাম উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বৃটেনের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার দৃঢ় প্রমাণের সঙ্গে নিশ্চিত হয়েছে যে, বহু সাইবার হামলার জন্য দায়ী জিআরইউ। তাদের এমন হামলায় কোটি কোটি পাউন্ড ক্ষতি হয়েছে অর্থনীতির। আর এ জন্য দায়ী করা হয়েছে রাশিয়ার সরকারকে। তারা বিশ্বজুড়ে যেসব সরকারি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলা চালিয়েছে তার মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডেমোক্রেটিক পার্টি, ওয়ার্ল্ড এন্টি-ডোপিং এজেন্সি, ইউক্রেনে মেট্রো সিস্টেম ও বিমানবন্দরগুলো, রাশিয়ার দুটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও দুটি রাশিয়ান মিডিয়া। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যভিত্তিক দুটি টিভি স্টেশনেও হ্যাকিং চালিয়ে হামলা করেছে জিআরইউ। সেখান থেকে তারা ২০১৫ সালের জুলাই ও আগস্টের মধ্যবর্তী সময়ে বিভিন্ন জনের ইমেইল একাউন্টে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন তথ্য চুরি করে। রাশিয়া রাষ্ট্রের মদতপুষ্ট হ্যাকাররা যেসব কোড নাম ব্যবহার করে তার মধ্যে রয়েছে ফ্যান্সি বিয়ার, পওনস্টোর্ম, সাইবার ক্যালিফাত, সার টিম, স্যান্ডওয়ার্ম ও ভুদু বিয়ার।
বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বলেছেন, এসব সাইবার হামলা কোনো জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বৈধ নয়। বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনযাত্রায় এর মধ্য দিয়ে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। জিআরইউয়ের কর্মকান্ড বেপরোয়া ও বৈষম্যমুলক। তারা অন্য দেশের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে তার বিশ্বস্ততাকে খর্ব করার চেষ্টা করে। এমন কি তারা রাশিয়ার বিভিন্ন কোম্পানি ও নাগরিকদের ক্ষতি করার চেষ্টা করে। তারা এসব করে আন্তর্জাতিক আইন, আদর্শের প্রতি কোনো কেয়ার না করে। তারা দায়মুক্তি বোধ করে। তাদের কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয় না। তাই তাদের প্রতি আমাদের পরিষ্কার বার্তা, জিআরইউ আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতাকে টার্গেট করে যেসব পদক্ষেপ নেবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে আমরা উচিত জবাব দেবো।
বৃটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে এ বিষয়ে বেশ কিছু সাইবার হামলার বিষয় চিহ্নিত করতে পেরেছে ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টার। তাতে দেখা গেছে বিশ্বজুড়ে এসব সাইবার হামলা চালাচ্ছে জিআরইউ। সর্বশেষ যে হামলা করা হচ্ছে তাতে নাম ব্যবহার করা হচ্ছে ব্যাড র্যাবিট। তারা কম্পিউটারের কনটেন্ট এনক্রিপ্ট করে অর্থ দাবি করে। এমন হামলায় ইউক্রেনের কিভ মেট্রো ও ওডেসা বিমানবন্দরে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে।