নির্বাচনে বিএনপির কৌশল নিয়ে যা বললেন ফখরুল

Slider ফুলজান বিবির বাংলা


ঢাকা: আগামী নির্বাচনে দৃঢ়তার সঙ্গে (স্ট্রংলি) অংশ নিতে চায় বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ রোববার তারা ঢাকায় মহাসমাবেশ করছেন। এখানে যেসব দাবি তুলে ধরা হবে তার মধ্যে অন্যতম হলো তাদের কারাবন্দি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি, নির্বাচন তদারকির জন্য নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করা। ডিসেম্বরের ওই নির্বাচন তদারকি করতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। মির্জা ফখরুলের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন রয়টার্সের সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম কাদির। তাকে মির্জা ফখরুল বলেছেন, একটি বৃহৎ দল হিসেবে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য আমাদের সব রকম প্রস্তুতি আছে। কিন্তু সে জন্য আমাদের প্রয়োজন লেভেল প্লেইং ফিল্ড। তবে তা এখন নেই। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে যে, ক্ষমতাসীন দলের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না। এ জন্য আমরা নিরপেক্ষ সরকারের দাবি করছি।

এই সাক্ষাতকারেই প্রথম আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কৌশল কি সে সম্পর্কে কথা বলেছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের অধীনেই আগামী নির্বাচন করার কথা বলছে ক্ষমতাসীন সরকার। কিন্তু বিএনপির অভিযোগ, এ সরকার ক্রমশ কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করছে। নির্বাচনে তারা কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়বে। ১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশে নির্বাচনে সাধারণ সহিংসতা ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। আর ডিসেম্বরে যে জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে তাতেও এর অন্যথা হবে বলে মনে হয় না। এখনও বিএনপির বেশ কিছু নেতা কারাবন্দি আছেন। এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি।

সাক্ষাতকারভিত্তিক ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, দুই দফায় প্রধানমন্ত্রী থাকা খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘদিনের তিক্ত বিরোধিতা রয়েছে। খালেদাকে দুর্নীতির অভিযোগে ফেব্রুয়ারিতে ৫ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। তার অভিযোগ, তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এটা করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানকেও অভিযুক্ত করে ১০ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে লন্ডনে বসবাস করছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বহুসংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। দলের অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী পদে কে লড়াই করবেন সে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করে।

ওদিকে, মিয়ানমারে নৃশংসতার শিকার প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমকে আশ্রয় দেয়ার কারণে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ব্যাপক প্রশংসা পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা ইস্যুতে তিনি ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হচ্ছেন। গত মাসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাজপথে নামা শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়েছে নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা। বিক্ষোভের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী, সিনিয়র ফটোসাংবাদিক শহিদুল আলম সহ বেশ কিছু মানুষকে জেলে ঢোকানো হয়েছে। এতে তাদের মুক্তি দাবি করে আন্তর্জাতিক অধিকারকর্মীরা জোরালো আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের অভিযোগ আছে। জুলাই থেকে ওই অভিযানে কমপক্ষে ২০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। গত সপ্তাহে জাতীয় সংসদ পাস করেছে একটি নতুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। কিন্তু এই আইনের কড়া সমালোচনা করেছেন সাংবাদিকরা। তারা বলছেন, এ আইন দিয়ে মিডিয়ার স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *