ঢাকা: প্রায় ১৫৮ বছরের পুরনো আইনকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করল সুপ্রিম কোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, পরকীয়া কোনও অপরাধ নয়। স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তি নয়। তাই যদি কোনও বিবাহিত মহিলা স্বেচ্ছায় পরকীয়ায় লিপ্ত হয়, তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। আজ বৃহস্পতিবার পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে রায় দেওয়ার কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টের।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বেঞ্চে ছিল রায়দান। পাঁচ জনের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই রায় দেন। তাঁরা হলেন, আর এফ নিরিমন, এ এম খানউইলকর, ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও ইন্দু মালহোত্রা। আদালতে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, “যদি কোনও পুরুষ কোনও বিবাহিত মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। তিনি আরও জানান, যে সব আইন ব্যক্তিগত মর্যাদায় আঘাত করে, মহিলাদের সমানাধিকারে বাধা দেয়, তা সাংবিধানিক হতে পারে না। কলকাতা থেকে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিদিন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে এর বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে এই মামলার শুনানি শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টে। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, পরকীয়া সামাজিকভাবে অপরাধ। এর ফলে ওই ব্যক্তির সঙ্গী, সন্তান ও পরিবারের উপর প্রভাব পড়ে। তাদের ক্ষতি হয়। ভারতীয় সমাজে বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। সেটি কোনওভাবেই খন্ডন করা উচিত নয়। তার উপর এমন আবেদনও জমা পড়েছিল, ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী পরকীয়ায় লিপ্ত হলে শুধু পুরুষেরই শাস্তি হবে। মহিলাদের কোনও শাস্তি হবে না। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজ রায় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। জানায়, ৪৯৭ ধারাটাই অবৈধ। যে কোনও সম্পর্ক ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করে। পরকীয়াও তাই। এটি কোনও ফৌজদারি অপরাধ নয়। সমাজে নারী ও পুরুষের অধিকার সমান। ১৫৮ বছরের পুরনো একটি আইন আজকের যুগে বলবৎ করা যায় না। স্ত্রী কখনওই স্বামীর সম্পত্তি নয়। তাই স্বামী কখনওই স্ত্রীর উপর জোর খাটাতে পারে না। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিদ্বজ্জনরাও। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় থেকে শুরু করে রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় সবাই এই রায়কে সমর্থন জানিয়েছেন।