নির্বাচনের আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সব সময় কাজের গতি জোরালো হয়। কিন্তু এবার কাজের গতি স্থবির হয়ে পড়েছে।
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আটকে রাখছেন। লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে প্রশাসনে। অনেক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অনেক সচিবই ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করছেন না। এমন স্থবিরতার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা ওপরে কথা বলে নেব। কেউ কেউ আবার মন্ত্রীদের কথাও শুনছেন না।
গুরুত্বপূর্ণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ নিয়ে অনেক মন্ত্রীই অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল আটকে থাকছে দিনের পর দিন। এতে ব্যাহত হচ্ছে সরকারের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। প্রশাসনে অতীতে কখনোই এমন হয়নি। সব সময় সরকারের মেয়াদ শেষে কাজের গতি থাকে তুঙ্গে।
বিশেষ করে রাজনৈতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হয় দ্রুত গতিতে। অথচ এবার প্রশাসনে সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। এ কারণে পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে অনেক মন্ত্রণালয়ে। বড় ১০টি মন্ত্রণালয়, যেগুলো বাজেটের সিংহভাগ বাস্তবায়ন করে সেগুলোর সার্বিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা বিরাজ করছে। অথচ অর্থ ছাড় সংক্রান্ত কোনো জটিলতা নেই এ বছর। যেটা অর্থবছরের শুরুতেই প্রজ্ঞাপন জারি করে সহজ করে দিয়েছে অর্থ বিভাগ। কিন্তু প্রশাসনের স্থবিরতার কারণে কোনো কাজই এগোচ্ছে না। এমন কি প্রশাসনের এক টেবিল থেকে আরেক টেবিলে একটি ফাইল যেতে অযথা সময়ক্ষেপণ করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে অনেক মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের মাসিক সমন্বয় সভার প্রতিবেদন দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। সরকারের একজন মন্ত্রীর একান্ত সচিব বলছিলেন, সামনে নির্বাচন অথচ সব কিছু থেমে আছে। কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। কোনো কাজই হচ্ছে না। এখনই যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে, নির্বাচনকালীন সরকারের সময় পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আরেক কর্মকর্তা বলছিলেন, কোনো কিছু ভালো ঠেকছে না। যেভাবে আমলারা কাজে স্থবিরতা এনেছেন তাতে মনে হচ্ছে কোথাও কোনো গরমলি হচ্ছে। সবকিছু যেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অথচ সরকারের অনেক কাজ এখনো বাকি। সরকারের হাতে সময়ও আছে। কিন্তু শীর্ষ আমলাদের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথিই আটকে আছে। যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ওই কর্মকর্তা বলছিলেন, এর আগে যেসব সরকার ছিল, তাদের মেয়াদের শেষ দিকে এমন পরিস্থিতি কখনো তৈরি হয়নি, যা এবার হচ্ছে।