জাতীয় সংসদের পরিচালক (গণসংযোগ-২) লাবণ্য আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে দূরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত। ভারতের টাটা মেমোরিয়াল হাসাপাতালে বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ পর্যন্ত ছয়টি ধাপে কেমোথেরাপি নিয়েছেন। এই ক্যামোথেরাপি নেওয়ার ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে মুক্ত হয়ে ব্লাড কাউন্ট বাড়ার অপেক্ষায় রয়েছেন লাবণ্য আহমেদ।
চিকিৎসার সময় কষ্টের কথাগুলো তার সহকর্মী সহকারী পরিচালক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জানিয়ে লাবণ্য বলেন, প্রতিটা কেমোথেরাপির পর যেন শরীরের সব শক্তি নিঃশেষ হয়ে আবার নতুন জন্ম লাভ করি। এ এক যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা…।
‘এক সপ্তাহ বিরতির পর সপ্তম ধাপ কেমো শুরু হবে। আর দুই ধাপ কেমো শেষ হলে আপাতত মেনটেইন্যান্স ফেজে কিছুদিন থাকতে হবে। এরপর শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে বোনম্যারো ট্রান্সফারের সিদ্ধান্ত। ’
তিনি তার শরীরের সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়ে বলেছেন, আমার জন্য সবাইকে দোয়া করতে বলিস। আমি সংসদের সব সহকর্মীকে খুব মিস করছি।
আমি যেন ভালো হয়ে সবার মাঝে ফিরে আসতে পারি সেই দোয়া চাই সবার কাছে।
বুধবার স্বপন কুমার বিশ্বাস জানান, সংসদের এই পরিচালক গত এপ্রিল মাসে অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হলে চিকিৎসকরা জানান তার শরীরে দূরারোগ্য ব্যাধি ব্লাড ক্যানসারের জীবাণু বাসা বেঁধেছে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা করিয়ে ভারেত নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিৎসার ব্যাপারে স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদের চিফ হুইপ খোঁজ-খবর রাখছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য অবদান রয়েছে লাবণ্য আহমেদের পরিবারের। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তার বাবা নাসির আহমেদ একজন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রশিক্ষক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তার আপন দুই মামা প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাহিত্যিক শহীদ শহীদুল্লা কায়সার এবং অন্যজন দেশবরেণ্য চলচ্চিত্রকার ও সাহিত্যিক জহির রায়হানের অবদান অনস্বীকার্য। তার মা শাহেনশা বেগম তার বুদ্ধিজীবী দুই ভাই হারানোর ব্যথা নিয়ে বুদ্ধিজীবী হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবির আন্দোলনের শুরু থেকেই ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এমনকি তার অবদানের জন্য তিনি যুদ্ধাপরাধীদের হুমকির মুখে পড়েন। লাবণ্য আহমেদ যাতে দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারেন সে জন্য সবার দোয়া প্রার্থনা করেছেন।