দেশবাসীর স্বপ্নের পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। বিশাল কর্মযজ্ঞে মুখরিত হয়েছে মাওয়া-জাজিরার পদ্মা।
নতুন করে শুরু হলো পদ্মাসেতুর স্প্যানে (সুপার স্ট্রাকচার) রেলওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ। পদ্মাসেতুর জাজিরা প্রান্তে সেভেন এফ স্প্যানের ওপর এরই মধ্যে প্রথম সেকশনে একটি স্ল্যাব বসিয়েছেন প্রকল্পে নিয়োজিত দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে জাজিরা প্রান্তে স্প্যানে স্ল্যাব বসানোর কাজ শুরু হয়। এর আগে মাওয়া থেকে স্ল্যাবগুলো জাজিরা প্রান্তে নিয়ে আসা হয়। একেকটি স্প্যানে ৪টি সেকশনে ৮টি করে মোট ৩২টি স্ল্যাব বসবে। সেই হিসাবে ৪১টি স্প্যানে রেলওয়ে স্ল্যাব বসবে এক হাজার ৩১২টি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পদ্মাসেতুর এক প্রকৌশলী জানান, বর্তমানে ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের মধ্যবর্তী ৭-এফ স্প্যানের উপর এসব রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হচ্ছে। এর আগে মাওয়া থেকে ৮টি স্ল্যাব নিয়ে আসা হয় জাজিরা প্রান্তে। স্ল্যাব নিয়ে মাওয়া থেকে জাজিরা পৌঁছাতে লাগে একদিন।
৮ টন ওজনের একেকটি স্ল্যাবের দৈর্ঘ্য ২ মিটার এবং প্রস্থ ৫.১৫ মিটার।
মঙ্গলবার প্রথমে স্ল্যাব বহনকারী ভাসমান ক্রেনটিকে ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলার বরাবর নির্ধারিত স্থানে রাখা হয়। এরপর সুবিধাজনক উচ্চতায় উঠিয়ে স্ট্রিংগার বিমসহ স্প্যানের উপর রাখা হয়। স্ল্যাব বসানো শেষে স্ল্যাবের মধ্যবর্তী স্থানে কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ করা হবে। স্প্যানের উপর রাখার আগে লোড টেস্টসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। মাওয়া প্রান্তে ৭০০ এর বেশি স্ল্যাব প্রস্তুত রয়েছে। জাজিরা প্রান্তে এখন যে ৬টি পিলারে ৫টি স্প্যান বসানো হয়েছে তাতে রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো হচ্ছে। এছাড়া স্ট্রিংগার বসানো হবে স্ল্যাবের সঙ্গেই। ইতিমধ্যে সেতুর ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০, ৪১ ও ৪২ নম্বর পিলারের উপর পাঁচটি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে জাজিরা প্রান্তে সেতুর পৌনে এক কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সেতুর কাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয় প্রথম স্প্যানটি। এরপর চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যানটি বসে। এর মাত্র দেড় মাস পর ১১ মার্চ শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। এর ২ মাস পর ১৩ মে বসে চতুর্থ স্প্যান এবং পঞ্চম স্প্যানটি বসে তার মাত্র এক মাস ১৬ দিনের মাথায়। ৬.১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। কংক্রিট আর স্টিল দিয়ে নির্মিত এ সেতুর উপর দিয়ে এক সাথে ট্রেন ও যানবাহন চলবে। দক্ষিণ বঙ্গের ২৩ জেলার মানুষের ভাগ্যের চাকা আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে। দেশবাসীর স্বপ্নের পদ্মাসেতু বাস্তবায়নের অপেক্ষায় দেশবাসী।