ঢাকা:জাতিসংঘের কড়া সমালোচনা করলেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং। তিনি বললেন, (তার দেশের) বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার নেই জাতিসংঘের। রোববার তিনি সেনাদের সামনে দেয়া বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী পরিচালিত পত্রিকা মায়াবতী’কে উদ্ধৃত করে এ খবর জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এক সপ্তাহ আগে জাতিসংঘের তদন্তকারীরা সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ও শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে বিচারের সুপারিশ করে। ওদিকে হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বলেছে, মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার করার অধিকার তাদের আছে। এসবের পরে মুখ খুললেন সেনাপ্রধান হ্লাইং। তিনি বলেছেন, তার দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকারই নেই জাতিসংঘের। জাতিসংঘের রিপোর্ট ও আইসিসির বক্তব্যের পর এটাই মিয়ানমারের সেনাপ্রধানের প্রথম প্রতিক্রিয়া।
সেনা সদস্যদের সামনে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন- কোনো দেশ, কোনো সংগঠন অথবা কোনো গ্রুপের একটি সার্বভৌম দেশের ভিতরে হস্তক্ষেপ করা এবং তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনোই অধিকার নেই। (মিয়ানমারের) আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নিয়ে যে কথাবার্তা হচ্ছে তা ভুল বোঝাবুঝি।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর চালানো নৃশংসতার তদন্তে এসেছিলেন। তারা তদন্ত শেষে রিপোর্ট দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, গত বছর সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতি নিধনের অভিযান চালিয়েছে। এ জন্য কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। এক্ষেত্রে সেনারা মাঝে মাঝেই জাতিগত রাখাইন দাঙ্গাবাজদের ব্যবহার করেছে। তারা হত্যাকান্ড চালিয়েছে। গণহারে ধর্ষণ করেছে। অগ্নিসংযোগ করেছে। নির্যাতন করেছে। অকল্পনীয় সহিংসতা চালিয়েছে। যা মানবজীবন সহ্য করতে পারে না। তবে সেনাবাহিনী এমন অভিযোগ একেবারেই অস্বীকার করেছে।
এরই মধ্যে নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের রিপোর্টকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা এ রিপোর্টকে একপেশে ও ত্রুটিপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছে। আইসিসি তাদের বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাও প্রত্যাখ্যান করেছে তারা।