কাস্টমসের চেকিংয়ের পর কোনো মালামাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা অন্য কোনো এজেন্সি চেকিং করতে পারবে না। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে পুনরায় চেকিংয়ের প্রয়োজন হলে আবার কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মান বাড়াতে এটিসহ ১৮টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সূত্রগুলো জানায়, ‘সন্দেহজনক’ অভিযোগের ভিত্তিতে আমদানি-রপ্তানির মালামাল ছাড়াও বিদেশ ফেরত যাত্রীদের মালামাল আটকিয়ে হয়রানি করে থাকে বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন এজেন্সির সদস্য। অনেক সময় মালামাল ছাড়ানোর জন্য অতিরিক্ত অর্থও দাবি করে থাকে তারা। এর ফলে একদিকে যেমন সাধারণ যাত্রীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন, তেমনি আমদানি-রপ্তানি পণ্য আটকে রাখার কারণেও ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের এসব অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও গেছে।
সভায় নজিবুর রহমান বলেন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীসেবার মানোন্নয়ন এবং কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে এর আগেও বেশ কয়েকটি সভা হয়েছে। এসব বিষয়ে আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতিও হয়েছে। তবে এ ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন প্রয়োজন।
এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবাই বিশেষ করে ব্যবসায়ী, বিমান, কাস্টমস, সিভিল এভিয়েশন এবং অন্যান্য সংস্থাগুলোকে নিয়ে একটি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
সভায় গৃহীত অন্য সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে— বিমানের জনবলের অভাবে ফ্লাইটগুলোতে কার্গো কম যাচ্ছে কি-না তা ভিজিলেন্স টিম পরিদর্শন করে দেখবে এবং বিমান, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, বিজিএমইএ-এর প্রতিনিধি নিয়ে এই ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হবে; অ্যারাইভাল কাউন্টারে পুরনো স্ক্যানিং মেশিনের পরিবর্তে এক মাসের মধ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক আধুনিক স্ক্যানিং মেশিন স্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে; ইমিগ্রেশন কর্মকর্তার সম্মতি ছাড়া যাতে কেউ ইমিগ্রেশন গেট অতিক্রম করতে না পারে বেবিচক সে ধরনের গেট সংযোজনের উদ্যোগ নেবে; বিমানবন্দরের পরিবেশ ঠিক রাখার লক্ষ্যে মালামাল রাখার জন্য বিমানবন্দরের বাইরে বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধা প্রদানের বিষয়টি যাচাই করে দেখতে হবে; পর্যটন সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিকালে সিলেট রুটে কমপক্ষে একটি ফ্লাইট পরিচালনার উদ্যোগ নিতে হবে; শুক্র ও শনিবারসহ বিমানবন্দরের কার্যক্রম সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখতে হবে ও মালামাল ডেলিভারি এবং গ্রহণ করতে হবে; অন্যান্য এয়ার লাইনসের ন্যায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস লিমিটেড কর্তৃক ব্যাগেজ হোম ডেলিভারির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
বেবিচক, বিমান, কাস্টমস হাউস ও অন্যান্য বেসরকারি সুবিধাভোগীরা সভা করে বিমানবন্দরের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা নিজেরাই সমাধানের উদ্যোগ নেবে। বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে কর্মরত সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সৃষ্টি করতে হবে; এর আগে যাত্রীসেবা সংক্রান্ত যতগুলো সভা হয়েছে তার সিদ্ধান্ত কতগুলো বাস্তবায়িত হয়েছে ও কতগুলো বাস্তবায়ন হয়নি সেগুলো যাচাই করে দেখবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। অবাস্তবায়িত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে; বিমানবন্দরে সব সুবিধা একসঙ্গে পাওয়ার জন্য ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ চালুর বিষয়ে বিমানের অভ্যন্তরে কর্মরত বেবিচক, বিমান, কাস্টমস এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বেসরকারি স্টেক হোল্ডাররা আলোচনার মাধ্যমে উদ্যোগ নেবেন।