তখনও ১৯ বল খেলার বাকি, দলের রান ২২৯ মাত্র! মুস্তাফিজের সাজঘরে ফেরার মধ্য দিয়ে ঘটল নবম উইকেটের পতন। অপরপ্রান্তে ১২২ রানে অপরাজিত থেকে একাই লড়াই করছিলেন মুশফিকুর রহিম।
মুস্তাফিজের বিদায়ে চোখভরা হতাশা নিয়ে তিনি পা বাড়ালেন ড্রেসিংরুমের দিকে। কিন্তু সামনের দৃশ্যটা দেখে যেন মিস্টার ডিপেন্ডেবলের দেহ-মনে বিদ্যুৎ খেলে যায়! এ কি, তামিম ইকবাল ব্যাট হাতে এগিয়ে আসছেন! সবাইকে অবাক করে দিয়ে মাঠে নামেন ড্যাশিং ওপেনার। বিষয়টি অবাক করেছে মুশফিকুরকে। বললেন, স্লিং থেকে হাত খুলে, গ্লাস কেটে সেট করে হাতে লাগিয়ে মাঠে নামবে তামিম। এটা কল্পনাও করতে পারিনি।
গতকাল ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই হাতে আঘাত পেয়ে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়ে মাঠের বাইরে যান তামিম। ব্যথা এতটাই তীব্র ছিল যে, সঙ্গে সঙ্গে ড্যাসিং ওপেনারকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই তামিম দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা করে নিজের ইনজুরি তুচ্ছজ্ঞান করে বাইশগজে ফিরলেন। প্রিয় মুশফিককে সঙ্গ দিতে মাঠে নামলেন।
প্রথমেই পড়লেন লঙ্কান বোলার সুরঙ্গা লাকমলের গতির সামনে। ভাঙা হাতে লাগলে ইনজুরি ভয়ঙ্কর হতে পারে, তাই বাঁ হাতটা শরীরের আড়ালে লুকিয়ে রাখলেন। ডান হাত দিয়ে দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিলেন বল। দৃশ্যটি যেন ক্রিকেটের ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।
এদিকে ভাঙা হাত নিয়ে সতীর্থ তামিমের মাঠে নামার ঘটনাটি যেন মুশফিককে নতুনভাবে উজ্জীবিত করে তোলে। দুবাইয়ের প্রচণ্ড গরমে এবং দীর্ঘ সময় ব্যাটিংয়ের কারণে সেঞ্চুরির পর ক্লান্ত হয়ে পড়া মুশি যেন নতুন করে শক্তি পেলেন। তাই বাকি বলগুলো একাই খেললেন। তামিমকে নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে রেখেই দলীয় খাতায় যোগ করেন আরও ৩২ রান। দলীয় স্কোর হয়ে যায় ২৬১। শেষ ওভারে মুশফিক আউট হওয়ার আগে করেন ১৪৪ রান। খেলেছেন ১৫০ বল। ১১টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৪টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন। নিঃসন্দেহে মিস্টার ডিপেন্ডেবলের ক্যারিয়ারে সেরা সেঞ্চুরি। যদিও মুশফিকের করা আগের ৫টি সেঞ্চুরিও দারুণ। কিন্তু কালকের এই সেঞ্চুরির কোনো তুলনা হয় না। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মাঠে নেমেছিলেন। এক প্রান্ত আগলে রেখে শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছেন।