জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের তৃণমূল পর্যায়ে অসন্তোষ বাড়ছে। এমনকি জেলা, উপজেলা, ইউপি চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
তারা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতা-কর্মী হলেও বিএনপি-জামায়াত ঘেঁষা হাইব্রিড-নব্যদের কারণে অবহেলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এদের অনেকে এলাকা ছাড়াও হয়েছেন। এ কারণেই তাদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ অসন্তোষ দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। সন্দ্বীপ, বাঁশখালী, সীতাকুণ্ড ও সাতকানিয়ায় নব্যদের দাপট বেশি। এসব এলাকার এমপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তৃণমূলের। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সন্দ্বীপে দলীয় কোন্দল চরম আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় এমপি মাহফুজুর রহমান মিতার সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের দূরত্ব আছে। নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশ এমপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।
সন্দ্বীপের ১১টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও তৃণমূল নেতা-কর্মী ছাড়াও সন্দ্বীপের পৌর মেয়র এমপির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ে সোচ্চার রয়েছেন। সন্দ্বীপ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী খসরু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এমপি দলীয় ত্যাগী নেতা-কর্মীদের বিতাড়নের মাধ্যমে সন্দ্বীপে ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করতে চান। দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে তিনি আওয়ামী লীগের মূল এজেন্ডা থেকে সরে গেছেন। বিএনপি, জামায়াতের কর্মীদের আওয়ামী লীগে যোগদান করিয়ে তাদের দিয়ে পরীক্ষিত নেতা-কর্মীদের নাজেহাল করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সন্দ্বীপের একাধিক স্থানীয় নেতা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের আগুন সন্ত্রাসী বিএনপি ও যুবদলের ক্যাডার জিয়াউদ্দিন বাবলু এখন এমপির অন্যতম আস্থাভাজন হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করে বাবলু বর্তমানে ছাত্রলীগ-যুবলীগ, পৌর কাউন্সিলর, ইউপি সদস্যসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা ও মামলা করেছে। বাঁশখালীতে এমপির সঙ্গে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাতজন ও যুবলীগের দুজন নেতা। ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা সক্রিয় হওয়ায় কয়েক গ্রুপে বিভক্ত রয়েছে দলের তৃণমূল। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এমপির বিরুদ্ধে জামায়াতপ্রীতির অভিযোগ তোলেন তৎকালীন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মুজিবুল হক। ভুয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে টিআর কাবিখার অর্থ লুট হয়েছে। বাঁশখালী পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডে কাজী নিয়োগে জামায়াত কর্মীর জন্য সুপারিশ করেন এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।